আরেকটি ১৫ আগষ্টের আশংকায় আশরাফ

Slider গ্রাম বাংলা টপ নিউজ ঢাকা বাংলার মুখোমুখি রাজনীতি সারাবিশ্ব

Sayed_Asharf_sm_999597980

ষ্টাফ করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
ঢাকা: ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের মত আরেকটি ঘটনার আশঙ্কা ব্যক্ত করলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ছয়দফা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আপনারা সব সময় সতর্ক থাকবেন। আমরা সব সময় সতর্ক থাকলে ১৫ আগস্টের মত আর কোনো ঘটনা ঘটবে না। শেখ হাসিনাকে নির্বাচনের মাধ্যমে অথবা বৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং অবৈধভাবে বাংলাদেশের একটি পক্ষ এটি করার চেষ্টায় লিপ্ত। আপনারা সতর্ক থাকলে এটা সম্ভব হবে না।

প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বাজেট সরকারের অর্থনৈতিক দর্শন। এটা কোনো গাণিতিক হিসাব নিকাশ নয়। যারা আমাদের এ দর্শন বিশ্বাস করে না, তারা এটাকে সমর্থন করেন না। সমর্থন করবেনও না। এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।

সমালোচকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের এ বাজেট পছন্দ না হলে অথবা পরিবর্তন-পরিবর্ধন চাইলে আপনাদের প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করুন।
কালোটাকা সাদাকরন প্রসঙ্গে আশরাফ বলেন, বাজেট দেওয়ার পর হৈ চৈ শুরু হয়েছে। যেন বাংলাদেশ গোল্লায় গেল। অথচ গত ৩০ বছরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ ছিল, তাতে দেশ গোল্লায় যায় নাই।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার‌্যক্রম ও উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সৈয়দ আশরাফ। তিনি বলেন, অনেকে বিদেশী টাকায় এখানে(বাংলাদেশে) সংগঠন তৈরি করেন। তারা তাদের গান গান। তারা বিদেশীদের অর্থে তাদেরই গান গাইবে এটাই স্বাভাবিক। এই তথাকথিত দেশপ্রেমিকরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তারা না জানে ইতিহাস, না জানে আইন, অর্থনীতি ও রাজনীতি।

‘স্বাধীনতার ঘোষক বলে অনেক দাবি করা হত, এখন এটা নাই’ উল্লেখ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, অনেকে স্বাধীনতার মামা, খালু, ভাই দাবি করতেন, এটা কমে গেছে। কারণ মানুষ যখন অন্ধকারে থাকে তখন তাদের সবকিছু বোঝানো সম্ভব। কিন্তু অবারিত আলো থাকলে সেটা সম্ভব নয়। তাই এই ঘোষক দাবিও কমে গেছে।

তিনি আরও বলেন, সত্য কোনোদিনই অসত্যের কাছে পরাজিত হয় নাই, হয় না। আজকে আমরা বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত পথে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে কাজ করে যাচ্ছি। যদি একটি শক্তিশালী, আধুনিক ও ভবিষ্যতমুখী রাষ্ট্র গঠন করতে পারি। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন হবে।

ছয়দফার স্মৃতিচারণ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমরা আমাদের জন্মের ইতিহাস ভুলে যাই। যে জাতি তার জন্মের ইতিহাস ভুলে যায় তারা জারজ সন্তানের উপাধি লাভ করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ছয়দফা দেন আওয়ামী লীগও পুরোপুরি গ্রহণ করে নাই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে আটভাগে বিভক্ত হয় আওয়ামী লীগ। এমনকি আইয়ুব খানও গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দিলেন। ছাত্রদের মাঝেও দ্বিধাবিভক্তি তৈরি হয়। এমনকি আমাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগেও বিভক্তি হয়েছিলো। তারপরও সারাদেশে বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা নিয়ে মানুষ বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে।

আশরাফ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা হঠাৎ করে আসে নাই। বাংলাদেশে, ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা এক না। ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতা এসেছে লণ্ডন ও দিল্লির গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে। আর আমাদের স্বাধীনতা এসেছে এক দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব–উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাস্থ্য সম্পাদক বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালের এই দিনে(৭ জুন) বাঙালির মুক্তির সনদ ঘোষিত হয়। আইয়ুব খানের মার্শাল ল’ শাসন, ’৬২-এর শিক্ষানীতিসহ সকল অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজকের এই দিনে ৬-দফা ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে এই ৬-দফার প্রতিটি দফা, বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে বাংলার জনগণের সামনে তুলে ধরেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *