গাজীপুর: লেগুনা থ্রি হুইলার যানজটের এবং দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ উল্লেখ করে আগামী তিনদিনের মধ্যে মহাসড়কে চলাচলরত লেগুনা, ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, করিমন, নসিমন, ভটভটিসহ সকল প্রকার অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের ভোগড়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলমান বিআরটি প্রকল্প ও সড়ক পরিদর্শন শেষে এ নির্দেশ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
এসময় মন্ত্রী ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কের কাজে গাফিলতির কারণে সানাউল হক এবং লিয়াকত আলী নামে দুই প্রকল্প পরিচালককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এছাড়া গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজাকে সতর্ক করে দেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনের পথে হাঁটলে বিএনপি ভুল করবে বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি মনে করেন, জনগণ এখন আন্দোলনের মুডে নেই, সবাই নির্বাচন ও ভোটের মুডে রয়েছে। আর এই মুহূর্তে আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতাও তিনি দেখছেন না।
বিএনপির আন্দোলনের হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা আন্দোলন করবে কেন, সেটা আমি জানি না। এই মুহূর্তে আন্দোলনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। দেশে স্বস্তিদায়ক পরিবেশ বিরাজ করছে। সামনে নির্বাচন, জনগণ নির্বাচনের মুডে, ভোটের মুডে আছে।’
নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনের নামে কোনো দল সহিংসতা সৃষ্টি করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।তিনি বলেন, ‘যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে দেশে একটি অস্থিতিশীল, নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চান, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বাংলাদেশে ২০১৪ ও ২০০১ সাল আর ফিরে আসবে না। সেই খোয়াব দেখলে তাদের সে খোয়াব অচিরেই কর্পূরের মতো উড়ে যাবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিরোধী দলের কাজই হচ্ছে সমালোচনা করা। বিরোধী দল থাকলে সমালোচনাতো হবেই। কিন্তু দেশ চলবে সংবিধান অনুসারে। সংবিধান অনুসারে আমরা দেশ চালাব। আমরা সংবিধানের বাইরে কোথায় অবস্থান নিয়েছি, সেটা বিরোধী দলকে পরিষ্কার করে বলতে হবে। নির্বাচন হবে, সেটাও সংবিধানের ভিত্তিতে।’
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়ে নানা অজুহাত খুঁজে বেড়াচ্ছে, তাদের ব্যাপার আলাদা। তারা মনে করেছে ২০১৪ সালের মতো সহিংসতার বাতাবরণ তৈরি করবে, কিন্তু সে আন্দোলন তাদের কিছুই দেয়নি। বরং তারা জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’
‘গত নয় বছরে তারা জনগণের কোনো সাড়া পায়নি। গত চার বছরে বিএনপি আন্দোলনের ডাক দিয়ে কখনোই সফলতার মুখ দেখেনি। মানুষ মনে করে, বিএনপির আন্দোলন মানেই জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন-আগুন সন্ত্রাস।’
জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশেই সময় এবং খরচ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তাই আওয়ামী লীগ ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে, তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সেটা মেনে নেব।’
পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী ডি এ কে এম নাহিন রেজাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।