সকালে একসঙ্গে ছুরি কিনে বিকেলে সাবেক স্বামীকে হত্যা করেন পপি!

Slider চট্টগ্রাম

কোরবানিতে প্রয়োজন হবে এই অজুহাত দেখিয়ে মাঈন উদ্দিনসহ একসঙ্গে ছুরিটি কিনেছিলেন রোকসানা আক্তার পপি। সকালে কেনা সেই ছুরি দিয়েই বিকেলে পপি গলাকেটে হত্যা করেন সাবেক স্বামী মাঈন উদ্দিনকে।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন শিক্ষানবীশ চিকিৎসক রোকসানা আক্তার পপি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোরে নগরের খুলশী ফয়’সলেক এলাকার লেকসিটি হোটেলের দ্বিতীয় তলার ২০৩ নং রুম থেকে মাঈন উদ্দিনের (৩০) দেহ থেকে মস্তক আলাদা করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মো. মাঈন উদ্দিন ও তার সাবেক স্ত্রী রোকসানা আক্তার পপি (২২) হোটেলে উঠেন। মো. মাঈন উদ্দিন ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া শুভপুর এলাকার মো. সিরাজুল হকের ছেলে এবং রোকসানা আক্তার পপি চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ মেহেদী নগর এলাকার আবু আহমদের মেয়ে। রোকসানা আক্তার পপি চীনের একটি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

শনিবার পুলিশ লাইন্সে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম জানান, ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে সাবেক স্বামী মাঈন উদ্দিনকে খুন করেছে পপি। ২০১২ সালে মাঈন উদ্দিন ও রোকসানা আক্তার পপি পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেন। পপির পরিবার এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ২০১৪ সালে মাঈন উদ্দিনকে তালাক দেন পপি। ২০১৫ সালে পপি চীনে পড়াশুনার জন্য চলে যান।

পরে পুনরায় পপির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন মাঈন উদ্দিন। এতে রাজি না হওয়ায় তাদের দাম্পত্য জীবনের বিভিন্ন ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন মাঈন উদ্দিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কাউকে না জানিয়ে চীন থেকে বাংলাদেশে আসেন রোকসানা আক্তার পপি। পরে মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে হোটেলে উঠেন এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটান।
আমেনা বেগম বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর রোকসানা আক্তার পপি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরে ঢাকা না গিয়ে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে নাসিরাবাদ আল ফালাহ গলির বাসায় ফেরত আসেন। পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি’র উত্তর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আবদুল ওয়ারিশ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান, নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আবু বক্কর সিদ্দিকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মলনে আমেনা বেগম গ্রেফতারের পর রোকসানা আক্তার পপির দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে বলেন, মাঈন উদ্দিন ও রোকসানা আক্তার পপি বৃহস্পতিবার সকালে একসাথে হোটেল থেকে বের হয়ে সকালের নাস্তা করেন। পরে শপিং করতে যান ষোলশহর এলাকার শপিং কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে কোরবানির জন্য প্রয়োজন জানিয়ে মাঈন উদ্দিনসহ ছুরি কেনেন রোকসানা আক্তার পপি। বিকেলে হোটেলে পৌঁছে সেই ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন মাঈন উদ্দিনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *