বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের দাবিতে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ থেকে তুলে ধরা সব দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজজামান খাঁন কামাল। এ কথা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।
টানা তিনদিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে নয় দফা দাবি জানাচ্ছে ছাত্ররা। এর আগে রবিবার বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনার পরও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওই সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে ব্যাপক গাড়ি ভাঙচুর করে তারা।
এই অবস্থায় বেলা একটার পর সচিবালয়ে জরুরি বৈঠক হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নেতা নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারি, এবং বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আজকের মিটিংয়ে শিক্ষার্থীদের সব দাবি আমরা মেনে নিয়েছি যে দাবিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি।’
‘আমি শিক্ষার্থীদের বলব, তোমরা ওঠে যাও, বাসায় ফিরে যাও, তোমরা আমাদের প্রিয় সন্তান, তোমাদের কষ্টে আমরাও ব্যথিত। তবে এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব কিছুই করব।’
বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটিও জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘ছাত্রদের দাবিগুলোর প্রেক্ষিতে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলো হলো, যেখান থেকে গাড়ি ছাড়বে সেখানে ফিটনেস, চালকের লাইসেন্স, রুট পারমিট পরীক্ষা করা হবে।…দেশব্যাপী এই পরীক্ষাটা করা হবে।’
এই পরীক্ষা কারা করবে-এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা মালিক-শ্রমিক নিজেরাই করবে। তারা চাইলে প্রশাসনের লোকজনও থাকবে।’
‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী রাস্তায় আছে তারাও দেখবে।’
মালিক-শ্রমিকদের বিরুদ্ধেই তো অভিযোগ, তারা কীভাবে নিশ্চিত করবে এগুলো- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘মালিক-শ্রমিক ছাড়া কি আমরা চলতে পারব? তা তো পারব না। তাদেরকে দিয়েই নিশ্চিত করতে হবে।’
কবে থেকে এই কাজ শুরু হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। আপনারা দেখেছেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান মহোদয়ও নেমেছেন অভিযানে।’
বিআরটিএ কোনো একটি রুটে অভিযান চালালে সব রুটেই গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানের জনবল সংকটও আছে। এগুলোর সমাধান কীভাবে হবে?-এমন প্রশ্নও রাখেন একজন গণমাধ্যম কর্মী।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বসেছি, কোথায় কোথায় সমস্যা আছে, সমাধান করব।’
ঢাকা-চট্টগ্রার রুটে শ্রমিকরা কাদের ইন্ধনে আন্দোলনে নেমেছে- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিন দিন ধরে এই অবরোধ চলছে, এটা যদি আরও দীর্ঘায়িত হয় তাহলে এখান থেকে বিভিন্ন শ্রেণি ফায়দা লোটার চেষ্টা করবে।’