ঢাকা: সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তামাশায় পরিণত হয়েছে দাবি করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দরা বলেছেন, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, গুলি বর্ষণ, নিপীড়ন, মেয়র প্রার্থীর ওপর বর্বরোচিত হামলা-হুমকি, পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অপতৎপরতার মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারা প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেন। আজ সোমবার রাজধানীতে এক জরুরী সভায় নেতৃবৃন্দরা এ দাবি করেন।
নেতৃবৃন্দরা বলেন, তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারের তৎপরতা ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ যেভাবে এক তরফা দেশ শাসনের বন্দোবস্ত কায়েম করেছে, তারই ধারাবাহিকতা। এই নির্বাচন বুঝিয়ে দিচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও আদৌ কোনো নূন্যতম গ্রহণযোগ্য বা গণতান্ত্রিক কায়দায় করার বিন্দুমাত্র কোনো ইচ্ছা বর্তমান সরকারের নেই।
তারা বলেন, বরিশালে হাতেনাতে জাল ভোট ধরার সময় বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তীর ওপর হামলা চালানো হয়। বরিশালে সিপিবির মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রের সামনে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের নিগৃহীত করে। রাজশাহীতে গণসংহতির প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদের প্রধান পোলিং এজেন্টের ওপর হামলা ও দুর্ব্যবহার, তাকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। সিলেটে সিপিবি-বাসদ মেয়র প্রার্থী আবু জাফর একই ধরনের আচরণের সম্মুখীন হন। সব জায়গায় প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া বা কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি ঘটেছে কেন্দ্র দখল করে অবাধে সিল মারা, ভোটারদের ভীতি প্রদর্শন এবং অপেক্ষামান ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার মত ঘটনাও। এসব নিয়ে অভিযোগ করা হলেও রিটানিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন নূন্যতম কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, এই পুরো ঘটনার মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে বর্তমান সরকারের জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের নূন্যতম কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই বর্তমান সরকারকে পদ্যতাগ করতে হবে, আলোচনার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে।
জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোমিনুর রহমান বিশাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বহ্নিশিখা জামালী, সিপিবির আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বাসদ (মার্কসবাদী) ফখরুদ্দীন কবীর আতিক প্রমূখ।