ঢাকা:তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট শুরু হওয়ার পর হামলা, গ্রেপ্তার ও কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
ভোট শুরুর তিন ঘণ্টার মধ্যে বরিশালে ২৬, সিলেটে ৫ ও রাজশাহীতে ১৭টি কেন্দ্র থেকে দলীয় এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুললেন বিএনপির এই নেতা।
রাজশাহী সিটিতে ২৪ জন এজেন্ট নিখোঁজ রয়েছেন বলেও দাবি করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে, তিন সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো আলামত দেখছি না। সরকার প্রচণ্ডভাবে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারের প্রথম থেকে সরকারের নীলনকশার নির্বাচন নিয়ে আমরা যে অভিযোগগুলো করেছিলাম, সেটিরই নগ্ন বহিঃপ্রকাশ তিন সিটিতে ফুটতে শুরু করেছে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের জন্যই সরকার তিন সিটির ভোট নিয়ে অনাচারের লিপ্ত হতে পেরেছে।’
রিজভীর অভিযোগ, ‘নির্বাচন কমিশন উচিত-অনুচিতের এথিকসের ধার ধারেনি বলেই নির্বিকার থাকছে এবং নৌকার প্রার্থীকে ভোট ডাকাতিতে উৎসাহ জুগিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের অসংখ্য অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ কমিশন কানে তোলেনি। কমিশন মূক ও বধির হয়ে গেছে।’
বিএনপির নেতা রিজভী বলেন, ‘বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এরা কখনোই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেবে না। কেন্দ্র দখল, বিরোধী দলের পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেওয়া, জাল ভোটে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করার “হাসিনা মার্কা” নির্বাচনকেই বাংলাদেশের নির্বাচনের মানদণ্ড করা হয়েছে।’
রিজভীর ভাষ্য, শেখ হাসিনা যত দিন ক্ষমতায় থাকবেন, তত দিনই এই মানদণ্ড অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ক্ষমতাসীনরা অহংকার আর উন্মত্ততায় বিচার-বুদ্ধি হারিয়ে ক্ষমতামায়ায় হিংস্র হয়ে নির্বাচনী বিজয় জোর করে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। আর আত্মা বিক্রিকারী নির্বাচন কমিশন ভোট শেষে অনুশোচনাহীন চরম মিথ্যাচার করে বিবৃতি দেবে। অবৈধ সরকারকে খুশি করতে নির্বাচন কমিশন নিজেদের স্বাধীন ক্ষমতাকে নিজেরাই হরণ করেছে।
সাবেক ছাত্রনেতা রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন একটি প্যারাসাইট (পরগাছা)। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিপক্ষ।
আজ সংবাদ সম্মেলনে রিজভীকে প্রশ্ন করা হয়, বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা বলেছিলেন, অনিয়ম হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। সেটা করা হয়েছে কি না? এ জবাবে রিজভী বলেন, ‘প্রতিরোধ না করলে রাজশাহীর সাবেক মেয়ের মিনুকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিত না পুলিশ। তাঁকে শারীরিকভাবে হামলার মুখে পড়তে হয়েছে। বরিশালের সরওয়ারকে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে তো খালি হাতে পারা যায় না। খালি হাতে যতটুকু করার নেতা-কর্মীরা তা করেছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।