একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহঙ্কার, আমাদের পরিচিতি, আমাদের গর্বের বিষয়। আমাদের জাতীয় আত্মপরিচয়ের এই গৌরবজনক অধ্যায়টির সঙ্গে মিশে আছে অমানবিক নির্যাতন ও গণহত্যারনীল বেদনা।
মুক্তিযুদ্ধের এই বেদনা ক্লিষ্ট দিকটি নতুন প্রজন্মের কাছে যথাযথ ভাবে তুলে ধরার লক্ষ্যে ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর যৌথভাবে ‘১৯৭১: গণহত্যা ও নির্যাতন’ শীর্ষক আটদিন ব্যাপী এক বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
আজ বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান নূর এম.পি. সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি জনাব এম. আজিজুর রহমান।
জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত গণহত্যার ৩০টি নিদর্শন, অধ্যাপক মুনতাসির মামুন রচিত ৭০টি গ্রন্থ এবং বিশিষ্ট চিত্র শিল্পীদের চিত্রকর্মের অনুকৃতি ও গণহত্যার আলোক চিত্রের সমন্বয়ে প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয়েছে।
মহাপরিচালক মহোদয় স্বাগত ভাষণে বলেন, জাতীয় জাদুঘর ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সাথে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করতে পেরে গৌরব বোধ করছি।
অধ্যাপক মুনতাসির মামুন প্রস্তাব করেন যে, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ১০০ নম্বরের কোর্স চালুকরা। গণহত্যা ও নির্যাতন নিয়ে কেউ কোন কটু মন্তব্য করলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এ ধরনের একটি আইন প্রচলন করা দরকার।
ঢাকাশহরের সব চাইতে বড় নির্যাতন কেন্দ্রে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সাথে যৌথ ভাবে জাতীয় জাদুঘর একটি ছোট জাদুঘর, স্মৃতিফলক স্থাপনকরা।
সংস্কৃতি মন্ত্রী মহোদয়বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর এই দেশটা উল্টোদিকে চালাতে শুরু করা হয়। মুনতাসির মামুন ঢাকার বাইরে যে কাজ শুরু করেছেন-সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। মন্ত্রীমহোদয় বলেন স্কুল এবং কলেজের ছাত্রদের জাদুঘরে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা প্রয়োজন।
মন্ত্রীমহোদয় শামসুর রাহমানের ‘অভিশাপ দিচ্ছি’ কবিতা থেকে কয়েক লাইন আবৃত্তি করেন।
জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অবট্রাস্টিজ এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সভাপতি তাঁর বক্তৃতায় বলেন যে, এই প্রদর্শনীর নিদর্শন, আলোকচিত্র গুলো দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের গ্যালারিতে একটি দেয়াল গণহত্যা ও নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরার প্রচেষ্টা নেয়া হবে।
প্রদর্শনীটি ৯ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত শনিবার থেকে বুধবার সকাল ৯.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৭.০০ টা এবং শুক্রবার বিকেল ৩.০০ থেকে রাত ৮.০০ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।