সিলেট জেলা প্রতিনিধি :: সিএইচটি মিডিয়া কর্তৃক আয়োজিত বর্ষসেরা অনলাইন সাংবাদিক সম্মাননা-১৭ অনুষ্ঠান রবিবার (১৫জুলাই ২০১৮) সিলেটের অভিজাত রেষ্টুরেন্ট প্রীতিরাজে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্রগ্রাম থেকে প্রকাশিত জাতীয় অনলাইন সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম’র ২০১৭ সালের বর্ষসেরা সাংবাদিক নির্বাচিত হওয়ায় হাফিজুল ইসলাম লস্করকে সিএইচটি মিডিয়ার পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
ঊকাব টুয়েন্টিফোর ডটকমের বার্তা সম্পাদক মনসুর বিন সালেহ সঞ্চলনায় ও সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম’র প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক নির্মল বড়ুয়া মিলনের সভাপতিত্বে এ সংবর্ধনা অনুষ্টান প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ২২নং ওয়ার্ডের (শাহজালাল উপশহর) কাউন্সিলর পদপ্রার্থী এড.সালেহ আহমদ সেলিম, প্রধান বক্তা ছিলেন, বর্ষীয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও সিলেট বিভাগ গনকল্যান ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুবের্দিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের প্রভাষক এবং সাপ্তাহিক ইউনানী কন্ঠ’র সম্পাদক ও প্রকাশক ডা. আক্তার হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী এড. রেজাউল হক, দৈনিক সংবাদ’র গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি আবুল কালাম, সাপ্তাহিক বৈচত্র্যময় সিলেটের সম্পাদক ও প্রকাশক আবুল কাশেম রুমন।
সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম’র বার্তা সম্পাদক জুই চাকমা, দৈনিক শ্যামল সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার আতিকুর রহমান নগরী, সিলেটভিউ পাবেল আহমদ, বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরাম’র সাধারন সম্পাদক ইজাজুল ইসলাম ইজাজ, সাবেক মহানগর যুবলীগের সহসভাপতি কামাল উদ্দীন, যুবলীগ নেতা জহির উদ্দীন, হলিবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমের বার্তা সম্পাদক রেজওয়ান আহমদ প্রমুখ।
উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, হলিবিডি টুয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদক সৈয়দ সুমন, বার্তা সম্পাদক আরাফাত হোসেন, ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম, সাংবাদিক বাশারুল ইসলাম, সাংবাদিক ইমরান, হাবিবুর রহমান, মিন্ঠু মিয়া, ডা. শেলু মিয়া, জয়দীপ চক্রবর্তী, আদিল, সুলতান তুহিন, তাহের, শাহিদ, আরমান, তোফায়ের, সিদ্দিক প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সারা দেশের প্রতিনিধিদের মাধ্যে হাফিজুল ইসলাম লস্কর বর্ষসেরা নির্বাচিত হন, তার এ অর্জন আমাদের সিলেটের গৌরব বৃদ্ধি হয়েছে। তিনি তার কলম দিয়ে জাতীয় অঙ্গনে দেশের মাধ্যে সিলেটের শ্রী বৃদ্ধি করেছেন। লস্কর আমাদের গর্ব ও অহংকারে পরিণত হয়েছে। তাঁর এ অর্জন সিলেটের অনলাইন মিডিয়া জগতের অন্যতম দিকপাল হিসেবে কাজ করবে।
বক্তারা আরো বলেন, অনলাইন মিডিয়া বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্বকে দশ বছর এগিয়ে নিয়েছে। অনলাইন মিডিয়ার কারনে পুরো বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয় এসেছে। অনলাইন মিডিয়ার ভবিষ্যৎ বিষয়ে বক্তারা বলেন প্রিন্ট মিডিয়ার দিন শেষ এখন সময় অনলাইন মিডিয়ার, অলাইন এখন সবকিছু। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ব্যাগভর্তি প্রিন্ট পত্রিকার বান্ডিল নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সময় শেষ। অনলাইন মিডিয়ার কল্যাণে এখন একটি মোবাইল যথেষ্ট। একটি মোবাইলের মাধ্যমে আমরা অনলাইনে বিশ্বের সকল খবরাখবর জানতে পারি। একসাথে যত ইচ্ছা অনলাইন সংবাদ পড়া যায়, চাহিদা মত তথ্য পাওয়া যায়।
কাজেই এখন ডিজিটাল যুগে অনলাইন মিডিয়া প্রধান মিডিয়া।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী বলেন, কিছু মানুষ নিদ্রিষ্ট কিছু সহজাত প্রবৃত্বি নিয়ে জন্মগ্রহন করে, তেমনি হাফিজুল ইসলাম লস্কর লেখনীর প্রতিভা নিয়েই জন্মগ্রহন করেছে, আমি তাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি যে, সে লেখালেখিতে সাচ্ছন্দ বোধ করে। আমি আজ গর্বিত যে, এরকম একটি মহত অনুষ্টানে অংশগ্রহন করতে পেরে। আমরা গর্বিত যে লস্কর আমাদের সিলেটের সন্তান, সারা দেশের সিএইচটি মিডিয়ার প্রতিনিধিদের মাধ্যে সেরা নির্বাচিত হয়ে নিজেকে তুলে ধরার পাশাপাশি সিলেট জেলাকে তুলে ধরতে পেরেছে। হাফিজুল ইসলাম লস্করের নিউজের মাধ্যমে আমরা দেশের পরিসরে সিলেটকে খুজেঁ পেয়ে আনন্দিত। তিনি এভাবে ক্রমান্নয়ে সাংবাদিকদেরকে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব নিয়ে দৃঢ়তার সাথে কাজ করে এবং বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনা করে দেশ ও দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বে নিজেদেরকে উপস্থাপন করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে হাফিজুল ইসলাম লস্কর বলেন, আমি দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য কাজ করেছি। পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমি কাজ করিনি। যে কেউ আত্মবিশ্বাসী হয়ে কাজ করলে সেখানে সফলতা আসবেই। তিনি বলেন, আমি নিউজ লেখাতেই নিজেকে খুঁজে পাই। নিউজই তার পরিচয় তুলে ধরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি তাকে বর্ষসেরা সাংবাদিক নির্বাচিত করার জন্য জুড়ী বোর্ড এবং সংবর্ধনা আয়োজনের জন্য সিএইচটি মিডিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এড. সালেহ আহমদ সেলিম বলেন, “অনলাইন মিডিয়া এখন বাস্তবতা। উদার নীতির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। এখন প্রযুক্তির হাত ধরেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা আমরা দেখছি।”
হলুদ সাংবাদিকতা ও মিথ্যাচার যেন সংবাদমাধ্যমকে গ্রাস করতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে নিরপেক্ষতা নয়, পক্ষ নিতে হবে,”
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল যুগে মানুষের সংবাদ পড়ার ধরন পাল্টাতে শুরু করেছে। মানুষ এখন বেশিরভাগই অনলাইন মিডিয়া নির্ভর হয়ে যাচ্ছে।
তবে অনলাই মিডিয়াগুলোতে সম্পাদনা বা সম্পাদকীয় ব্যবস্থা থাকতে হবে। একটি গণমাধ্যমে সম্পাদনা ব্যবস্থা ছাড়া তা কখনোই পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
তিনি বলেন, দেশে এখন সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীন তথ্য কমিশন গঠনের কারণে গণমাধ্যম এখন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে।
সভাপতির বক্তব্যে নির্মল বড়ুয়া মিলন বলেন, অনলাইন মিডিয়া দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনলাইনেই অভ্যস্ত হচ্ছে। এ মাধ্যমেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আর আমাদের রিপোর্টাররা মোবাইলেই সংবাদ লিখছেন। এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম।
ডিজিটাল মিডিয়া বা অনলাইন নিউজ পোর্টাল এখন সময়ের দাবি। নতুন প্রজন্মের কাছে এই মাধ্যম অধিক জনপ্রিয়। তবে প্রান্তিক মানুষের কাছে এখনও তা পৌছে যেতে পারেনি। তিনি বলেন বিশ্বে প্রিন্ট মিডিয়া কমছে। অনলাইন মিডিয়া বাড়ছে। তাই আমাদের এর নেতিবাচক প্রসারের বিষয় সর্তক হতে হবে।
সমগ্র বিশ্ব এখন অনলাইন ভিত্তিক মানুষ এখন আর টিভি চ্যানেল পত্রিকা খুঁজতে চায় না। তারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে যেখানে আছেন সেখান থেকে আপডেট থাকতে চান।
বর্তমান বিশ্বের নির্বাচনগুলোতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিশেষ প্রভাব ফেলছে। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেক বড় সোর্সের কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে সংবাদ কতটা বস্তুনিষ্ঠ তা তা যাচাই তবে দেখতে হবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় আরও দশ বছর সময় প্রিন্ট সংস্করণ রাজত্ব করবে। আমাদের সব সময় আপডেট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তিনি ২০০৮ সালে দেশে ১২ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকলে বর্তমানে তা ৬ কোটিতে পৌঁছে। ১৩ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে ৪ কোটি মানুষ আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাই যেমন নতুন চ্যালেঞ্জ আছে আছে নতুন বাস্তবতা।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সিলেট জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক হাফিজুল ইসলাম লস্করকে মানপত্র, ফুল এবং ক্রেষ্ট দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্টানে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ থেকে তেলাওয়াত হাফিজ মাওলানা আব্দুল হাই।