সিলেট প্রতিনিধি :: সিসিক নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে চলছে রীতিমতো তোলপাড়। দল মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিপক্ষে বিদ্রোহী হয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক, তিনি আবার দলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও তুলেছেন। সেসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে দল মনোনীত প্রার্থী ইঙ্গিত দিচ্ছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী ‘ফাঁদে পড়েছেন’।
সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীকে। এতে নাখোশ হয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম।
এবার তিনিই প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। দল তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় বিদ্রোহ করেন তিনি, নাগরিক কমিটির ব্যানারে হয়েছেন মেয়র প্রার্থী। শুধু প্রার্থী হয়েই বসে থাকেননি বদরুজ্জামান সেলিম। খোদ দলের মেয়র প্রার্থী আরিফের বিরুদ্ধে অভিযোগও তুলেছেন তিনি। হলফনামায় আরিফের তথ্য গোপন, তার স্ত্রীর সম্পদ, আরিফ দলের জন্য ক্ষতিকারক-এরকম নানা অভিযোগ তুলেছেন সেলিম।
বদরুজ্জামান সেলিম বলেছেন, ‘আরিফ সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু তিনি হলফনামায় নিজেকে স্বশিক্ষিত দাবি করেছেন।’ এই অভিযোগে আরিফের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সেলিম।
সেলিম আরও বলেছেন, ‘আরিফ ও কামরানের স্ত্রীরা এতো সম্পদের মালিক বনে গেলেন কোন জাদুমন্ত্রে? আরিফ ও কামরান নিজেদের ও স্ত্রীদের যে সম্পদের হিসাব হলফনামায় দিয়েছেন, তার মাধ্যমে নগরবাসীকে পরিহাস করেছেন। মেয়র পদ কি টাকা কামানোর মেশিন? নির্বাচনে ভোট দেয়ার সময় নগরবাসীর এ বিষয়টি চিন্তা করা উচিত।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুরুতে ‘জাগদল’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই জাগদলের সদস্য হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি বদরুজ্জামান সেলিমের।
সেলিম বলছেন, ‘নয় মাস আগে মহানগর বিএনপির সভাপতি, ২৭টি ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দের সম্মতিতে একটি স্মারকলিপি দলীয় চেয়ারপার্সন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, স্থায়ী কমিটির সকল সদস্য ও মহাসচিবকে প্রদান করা হয়। যাতে দলের জন্য ক্ষতিকারক আরিফুল হক চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার পক্ষে যুক্তিসংগত বক্তব্য ছিল।’
বদরুজ্জামান সেলিমের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সিসিকের সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেলিম ‘ফাঁদে পড়েছেন’ এবং ‘অন্য কারো পারপাস (উদ্দেশ্য) বাস্তবায়ন করছেন’।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কে কি বললো…কতোদিনই কতো সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে, কারো ব্যক্তিগত ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। একজন মানুষ সংবাদ সম্মেলন করেছে, এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। তার ব্যক্তিগত বক্তব্য নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। আমরা একটা সংগঠনের আদর্শে বিশ্বাস করি। দায়িত্বশীল পদে থেকে কারো ট্র্যাপে পড়ে, ফাঁদে পড়ে নিজের অস্তিত্বকে বিলীন করা উচিত নয়।’
আরিফ বলেন, ‘দল এখন ক্রাইসিস মুহুর্তে। আমি যদি দলের সদস্য হয়ে থাকি, তবে আমার উচিত হবে দলের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে কাজ করা। আমার মনে হয়, দেরিতে হলেও বুঝতে পারবেন (সেলিম)।
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফ আরও বলেন, ‘অন্য কারো পারপাস (উদ্দেশ্য) সার্ভ (বাস্তবায়ন) করার জন্য অনেক নাটক হতে পারে, অনেক কিছুই হতে পারে। আমি মনে করি, এই পবিত্র মাটির ভোটার হলেন আসল জনগণ। তাদের কাছে সব পরিষ্কার। তারা যাকে ভালো মনে করেন, তাকেই বেছে নেবেন।’
আরিফ সরকারি কলেজে পড়েছেন, কিন্তু তিনি হলফনামায় ‘স্বশিক্ষিত’ উল্লেখ করেছেন, এমন অভিযোগ বদরুজ্জামান সেলিমের।
কিন্তু আরিফ বলছেন, ‘আমার সার্টিফিকেট থাকলে তো দিতাম।’