মাদারীপুরে গণধর্ষণের পর জহুরা আক্তার (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রীকে হত্যার ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ ধর্ষণ ও হত্যা মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে এ ঘটনাকে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে কালকিনি থানা পুলিশ।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কালকিনি উপজেলার জালালপুর গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জরুরা আক্তারকে গত ৩ ডিসেম্বর রাত ১টার দিকে স্থানীয় খলিল খানের বখাটে ছেলে বোরহান খান (১৮), বশীর মহাজনের ছেলে হযরত আলী মহাজন (২৭) এবং মালেক মহাজনের ছেলে রেজওয়ান মহাজন (৩০) ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে প্রবেশ করে মুখে ওড়না চেপে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় জহুরা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
পরে জহুরার মৃতদেহের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় ধর্ষক রেজওয়ান নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণের জন্য একই বাড়ির পাশের ঘরের ঘুমন্ত জহুরার মা মরিয়ম বেগমকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জানান, জহুরার ঘর থেকে করা যেন বেড়িয়ে গেল। এরপর থেকেই রেজওয়ানসহ তিন ধর্ষক এলাকাছাড়া।
পরে পরিবারের লোকজন জহুরার মৃতদেহ উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরের দিন খবর পেয়ে কালকিনি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা নথিভুক্ত করে।
এদিকে, পরে জহুরার চাচা আবদুর রব খান বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করতে গেলে আবেদন রেখে তাদের ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত ধর্ষণ ও হত্যা মামলা নিতে রাজি হচ্ছে না পুলিশ।
এ ব্যাপারে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইদ্রিস জানান, মেয়েটির মা ও পরিবারের সদস্যরা ওই ৩ যুবককে জড়িত বলেছে। তবে অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
জানতে চাইলে মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল বলেন, শরীয়তপুর থানার সহযোগিতায় জহুরার ময়নাতদন্তের আলামত ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।