বিশ্বকাপে গ্রুপ-‘সি’ থেকে ফেবারিট ছিল আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া। অপর দুই দল আইসল্যান্ড ও নাইজেরিয়া আলোচনায় আসেনি।
অথচ এই আইসল্যান্ডে হোচট খেল আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে, আহমেদ মুসার জোড়া গোলে আইসল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারায় নাইজেরিয়া। তাতেই জমে উঠল এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় পর্বে উঠার সমীকরণ।
এরপরই বিশ্ব সংবাদমাধ্যমে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার ম্যাচ নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা। যেখানে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসির সঙ্গে ডাগআউটে থাকা কোচ হোর্হে সাম্পাওলিকে বিশেষ আলাপ করতে দেখা যায়।
কিছু সংবাদ মাধ্যম বলছে, ওই আলাপের পর যেহেতু সার্জিও আগুয়েরোকে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামানো হয়েছে, সেহেতু হয়তো সাম্পাওলি এই সিদ্ধান্ত পেতেই দ্বারস্থ হয়েছেন মেসির। অথবা মেসিই হয়তো কোচকে বলেছেন বন্ধু আগুয়েরোকে মাঠে নামাতে। কেউ কেউ আরেকটু রঙ মাখিয়ে বলছেন, আর্জেন্টিনা দলে যে কোচের নিয়ন্ত্রণ নেই, এই বিষয়টিই তার নজির।
তবে এর পেছনে ‘প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন’ বলে দাবি স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম ‘স্পোর্ট’র।
আর্জেন্টাইন সাংবাদিক ভেরোনিকা ব্রুনাতি এ বিষয়ে ‘স্পোর্টে’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছেন, আগুয়েরোকে নামানোর অনুমতি নয়, সাম্পাওলি বরং নিজের পরিকল্পনা জানাচ্ছিলেন মেসিকে।
যে মুহূর্তে দলের অধিনায়কের সঙ্গে সাম্পাওলি কথা বলছিলেন, তখন আর্জেন্টাইন আক্রমণভাগে ছিলেন হিগুয়াইন ও মেসি, স্কোরলাইন ১-১। সে মুহূর্তে জয়ের জন্য হন্যে হয়ে আরেকটি গোলের সুযোগ খুঁজছিল আকাশি-সাদা জার্সিধারীরা। সেজন্য কোচ সাম্পাওলি রক্ষণভাগের তাগলিয়াফিকোকে উঠিয়ে আক্রমণভাগে আগুয়েরোকে নামানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়টিই আক্রমণের প্রাণভোমরা মেসিকে জানাতে সাম্পাওলি তখন তার সঙ্গে কথা বলেন। একইসঙ্গে অধিনায়ককে বলেন, তিনি যেন ডানপ্রান্ত থেকে সরে ‘১০ নম্বর পজিশনে’ খেলা শুরু করেন এবং সামনের দিকে আগুয়েরোকে জায়গা করে দেন। তাতে মেসির সামনের দিকে দুই পাশ দিয়ে হিগুয়াইন-আগুয়েরো যুগল আক্রমণের ধার বাড়বে।
আক্রমণভাগে ৭৯তম মিনিটে আগুয়েরোকে নামানোর ফলও হাতেনাতে পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিছুক্ষণ পরই জয়সূচক দ্বিতীয় গোলটি করেন মার্কোস রোহো। সে সময় দেখা যায়, মার্কাডো যখন ডানপ্রান্ত থেকে ডি-বক্সে ক্রস দিচ্ছিলেন, তখন আগুয়েরো নাইজেরিয়ার গোলপোস্টের বাঁ পাশে চলে আসেন, তাকে ঠেকাতে প্রতিপক্ষের তিন ডিফেন্ডার সেদিকে চলে যেতেই রক্ষণ থেকে ডি-বক্সে উঠে আসা রোহো খালি জায়গা পেয়ে যান, তাতেই সুগম হয়ে যায় আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল আদায়ের পথ। আর তাতে নিশ্চিত হয় আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় রাউন্ডও।
ক’দিন আগেই সংবাদমাধ্যমে গুঞ্জন উঠেছিল, আর্জেন্টিনা দলের সিনিয়র খেলোয়াড়রা নাকি কোচ সাম্পাওলির নির্দেশনা মানছেন না, এমনকি দলের মধ্যে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের গুঞ্জনও ছড়িয়ে পড়ে। নাইজেরিয়া ম্যাচের আগে পরে সে সব উড়িয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়রাই।