শেষ হচ্ছে না রেলের সেই খালাসী নিয়োগ!

Slider চট্টগ্রাম

215921_bangladesh_pratidin_khalasi

দীর্ঘদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ না হওয়ায় জনবল সংকটে পড়ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রতি বছরই রেলের কোন না কোন বিভাগ থেকে বিভিন্ন শ্রেনীর কর্মকর্তা-কর্মচারিরা অবসরে যাচ্ছেন।

সৃষ্টি হচ্ছে আরো শূন্যপদ। এতে ৪ বছর আগের সেই আলোচিত ৮৬৫ খালাসী পদের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান থাকলেও নিয়োগ বাণিজ্য, তদবির, অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রেল অঙ্গনে। এছাড়া মামলা সংক্রান্ত জটিলতাসহ নানাবিধ কারণে নিয়োগ শেষ করতে না পারায় বিকল্প চিন্তায় কাজ করছেন নিয়োগ কমিটিসহ রেলওয়ে প্রশাসন।
সম্প্রতি লোক নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি মর্মে অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়। এরপর রেলওয়ের বিদ্যমান নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যালোচনা ও শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় রেল ভবনে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, সরকারের ভেতন স্কেলের সাথে সাথে রেলের নিয়োগ-বাণিজ্যে মোটা অংকের টাকাও বাড়িয়েছেন নিয়োগ-বাণিজ্যের সাথে থাকা চক্রটি। বাণিজ্যের সাথে থাকা লোকজনই এসব মামলা করছেন। তাদের উদ্দেশ্য চাকরি দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয়া টাকাগুলো মামলা হলেই আটকে রাখা সহজ হবে। মন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা থাকলেও চিহ্নিত লোকদের কারণে নানাবিধ প্রশ্ন উঠে আসছে।

রেলের নিয়োগ সম্পন্ন না হলে ট্রেনসহ রেল প্রশাসনে দক্ষ লোকের সংকট দেখা দিবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
খালাসী নিয়োগ কমিটির আহবায়ক সিএমই মিজানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে রেলের খালাসীসহ বিভিন্ন পদের নিয়োগ সম্পন্ন করার খুবই দরকার। ধীরে ধীরে জনবল সংকটে আসছে রেলওয়ে। তবে মামলা জটিলতা থাকলেও নিয়োগ জরুরী হওয়ায় যে কোন নিয়মের মধ্যেই এ খালাসী নিয়োগ শেষ করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

রেলওয়ে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের আলোচিত নিয়োগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খালাসী পদ। এ পদের আগের নিয়োগ নিয়োগও ব্যাপক তোলপাড় হয়েছিল। একইভাবে চলমান ৮৬৫ খালাসী পদের নিয়োগ নিয়োগ নিয়েও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। দীর্ঘ ৪ বছর আগে শুরু হলেও নতুন করে আবারও প্রক্রিয়া শুর হওয়ায় অনিয়ম, তদবির, নিয়োগ বাণিজ্য ও মামলা জটিলতার মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার প্রস্তুতিও চলছে। এ নিয়োগ কমিটির দায়িত্বে থাকা একজন মারা গেছেন অন্যজন আরেক মন্ত্রণালয়ে চলে গেছেন। বর্তমানে আহবায়কের দায়িত্বে আছেন সিএমই মিজানুর রহমান, সদস্য সচিব জোবেদা আকতার ও সদস্য ডিএন-১ রফিকুল ইসলাম। ফলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও কমিটির সমন্বয়হীনতাসহ নানাবিধ জটিলতার মধ্যে চলছে নিয়োগ প্রক্রিয়া।

এ নিয়োগে যাছাই-বাছাইকৃত আবেদনের মধ্যে রয়েছে ভোটার আইডি কার্ড, স্কুলের সনদ, একই ব্যক্তির পৃথক জন্ম তারিখ, জন্মনিবন্ধন কার্ড, জালিয়াতি করে বয়োবৃদ্ধদের চাকরিসহ নানাবিধ অনিয়ম। খালাসীর ফলাফল ঘোষনার অপেক্ষায় থাকা একটি তালিকায় অনিয়মের কিছু তথ্য রয়েছে। পরীক্ষার এ ফলাফল ঘোষণা করা হলেই আরো অনেক তথ্য বের হয়ে আসবে। একই সাথে রয়েছে শ্রমিক সংগঠন, অবসরপ্রাপ্ত চিহ্নিত কিছু নেতা-কর্মচারি, রাজনৈতিক নেতার নামের ডিও লেটার নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের সেই চক্রটি সক্রিয় রয়েছে। রেলে অস্থায়ীভাবে কর্মরত কিছু ব্যক্তি তাদেরকে চাকরিতে স্থায়ী করার দাবিতে একটি চক্র বিভিন্ন কৌশলে মামলা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর আগেও অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরতরা তাদেরকে চাকরিতে স্থায়ী করার দাবিতে মামলা করে রেলে খালাসি নিয়োগ কার্যক্রম দীর্ঘয়িত করেছিল। তাছাড়া রেলওয়ে সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে অনিয়ম হচ্ছে এমন আভাস তুলে চট্টগ্রামে খালাসীসহ নানাবিধ নিয়োগের বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছিল শ্রমিক নেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *