ঢাকা : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত দি পেনিনসুলা চট্টগ্রাম লিমিটেডের শেয়ার দর রয়েছে তলানিতে। ধারাবাহিক শেয়ার দর কমায় এই কোম্পানিটির শেয়ার ধারণ করা বিনিয়োগকারীরা বিপাকে রয়েছে বলে জানান শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানান, আইপিওতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর নির্ধারণ করা হয় ৩০ টাকা। অবশ্য সুনামের কারণে প্রিমিয়াম ধরা হয়েছিল ২০ টাকা। বর্তমানে এ কোম্পানির শেয়ারটির দর প্রায় ছয় মাসের মধ্যেই নির্দেশক মূল্যের নিচে নেমে গেছে। লেনদেন শুরুর দিনে এ কোম্পানির শেয়ার দর ৩৬.৭০ টাকার হলেওসর্বশেষ সোমবারে শেয়ারটির দর ২৭.৯০ টাকা অবস্থান করছে। কোম্পানিটি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর চলতি বছরের ১৫ জুন লেনদেন শুরু করে। শুরুর প্রথম চার কার্যদিবসে শেয়ারটি দর বাড়ার মুখ দেখেনি। এ কোম্পানি শেয়ার এক কার্যদিবসে বাড়লে পরের কয়েক কার্যদিবস শেয়ার দর কমার দিকে থাকত।
শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ার কিনে শুধু লোকসান গুনছে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। কেন কোম্পানির শেয়ার দর কমছে তা বুঝে উঠতে পারছে না। তাই কোম্পানির শেয়ারে কি আছে, তাও ভাবনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিনিয়োগকারীসহ সকলের মুখে এখন একটাই কথা কি হচ্ছে দি পেনিনসুলায়। এ কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৪৮.৬৭ শতাংশ ধারণ করছে। অথাৎ সাড়ে ৫ কোটি শেয়ার ধারন করছে এসব বিনিয়োগকারী। শুরু থেকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৮.৮০ টাকা করে লোকসান হলে বিনিয়োগকারীদের মোট অর্থের ক্ষতির পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। তাই এ কোম্পানির শেয়ার দর স্বাভাবিক নিয়মে নামছে কি না এ ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি আশা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
এদিকে কোম্পানিটি ২০১৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছর শেষে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি সমাপ্ত অর্থবছর শেষে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২.৭০ টাকা, শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) ৫৪.৭৫ টাকা। অপরদিকে ২০১৪ সালের (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) তিন মাসে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৮ পয়সা। যা আগের বছর একই সমেয়ে ছিল ৩০ পয়সা।
কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে ৫ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৬৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে প্রতিটি শেয়ারে ফেসভ্যলূ ১০ টাকার সাথে প্রিমিয়াম ২০ টাকাসহ মোট ৩০ টাকা নির্দেশক মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিল।
লঙ্কাবাংলা, শাকিল রিজভী, ধানমন্ডি সিকিউরিটিজ হাউজের একাধিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারনিউজ২৪কে বলেন, আমরা মৌলভিত্তিক শেয়ার মনে করে কোম্পানিটির শেয়ার ধারণ করি। শুরু থেকে এ পষর্ন্ত এ কোম্পানির শেয়ার ধারন করে আসছি। কিন্তু এ কোম্পানির শেয়ার ধারণ বা ক্রয় করে শুধু লোকসানই গুনছি। তাই এ কোম্পানির শেয়ার দর কমার ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি আশা করছেন এসব ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
শেয়ার দর প্রসঙ্গে কোম্পানির সিএফও ও সচিব নুরুল আজিম বলেছেন, দর বাড়া বা কমা আমাদের হাতের নাগালে নয়। অবশ্য দর কমার ব্যাপারে কোম্পানির কোন কর্মকর্তা জড়িত নয় বলে দাবী করেন এ কর্মকর্তা। দর কমার পেছনে উল্লেখ্যযোগ্য কোন কারন নেই বলেও জানান তিনি।