মেসির নেতৃত্বাধীন র্যাঙ্কিংয়ের ৫ নম্বর দলের কাছ জয় পাওয়াটা যে সহজ হবে না এটা ভালো করেই জানতো র্যাঙ্কিংয়ের ২২ নম্বর দল আইসল্যান্ড। আর এই কারণে জয়ের চেয়ে বেশি ড্রয়ের দিকে নজর ছিল নর্ডিক দেশটির।
একই সঙ্গে চিন্তা ছিল পাল্টা আক্রমণে গোল ছিনিয়ে আনা। পরিকল্পনা মতো সেটা করতে পেরেই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ড্র করেও ম্যাচ শেষে যেন জয়ের উল্লাসে মেতে উঠে তিন লাখ ৩৫ হাজার মানুষের দেশটি।
শনিবার রাতে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র করলেও ম্যাচে আর্জেন্টিনার আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে গোল করতে ব্যর্থতার কারণে বেশিরভাগ সময় পায়ে বল রেখেও একরাশ হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে মেসি-আগুয়েরোদের। অথচ ১৯তম মিনিটে আগুয়েরোর দুর্দান্ত গোলে শুরুতেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিলো দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। যদিও মুহূর্তের মধ্যে সেটা হতাশায় পরিণত হয়। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লিওনেল মেসি পেনাল্টি মিস না করলে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতো হোর্হে সাম্পাওলির শিষ্যরা।
মেসি এদিন সেন্টার মিডফিল্ডে খেলায় অধিকাংশ সময় আর্জেন্টিনা মাঝখান দিয়ে আক্রমণে গেছে। উইং দিয়ে ভালো আক্রমণ গড়তে না পারায় প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভাঙন ধরানো সম্ভব হয়নি।
মাঝমাঠের উপরে প্রচুর পাস খেলেছে সাম্পাওলির দল। কিন্তু প্রতিপক্ষ ডিফেন্সকে ফাঁদে ফেলতে যে তৎপরতার দরকার সেটি ছিল না।
ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। বক্সের বাঁ দিকে মেসি নেওয়া ফ্রি-কিকে কেউ পা লাগাতে পারেনি। তিন মিনিট পর আরেকটি ফ্রি-কিক থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল মেসি। কিন্তু তাগলিয়াফিকো মাটিতে পড়ে যাওয়ার সময় বলে মাথা ঠুকালেও বল চলে যায় জালের ওপর দিয়ে। এক মিনিট গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন আইসল্যান্ডের বিরকির বজারসন। কিন্তু টার্গেট ঠিক রাখতে ব্যর্থ হন তিনি।
ম্যাচের ১৯তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। মার্কোস রোহো ভিড়ের ভেতর আগুয়েরোকে বল দেন। শরীর ঘুরিয়ে দুর্দান্ত শটে জালে বল জড়িয় উল্লাসে ফেটে পড়েন আগুয়েরো। তবে ৪ মিনিট পর আইসল্যান্ডের নাম্বার ১১ আলফ্রেড ফিনবোগাসন গোল করে সমতায় ফেরান দলকে।
১-১ সমতায় থাকার পর ড্র-ই ধরে রাখার মানসিকতা নিয়েই দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে আইসল্যান্ড। আগে রক্ষণ, পরে আক্রমণ। আর সেই রক্ষণ ভেদ করে জয়সূচক গোলটি বের করে আনতে পারেনি মেসিরা। তাই মাঠে নান্দনিক পাসিং ফুটবল খেললেও ম্যাচ শেষে সেটা আর চোখে ভাসছে না। যদিও ৬২তম মিনিটে বক্সে মেসিকে ফাউল করলে পেনাল্টি দেন রেফারি। সেই মেসির নেওয়ার দুর্বল পেনাল্টি শটটি বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। যদিও আরও একটি পেনাল্টি পেতে পারতো আর্জেন্টিনা। কিন্তু সেটা রেফারি চোখ এড়িয়ে যায়-ভাগ্য সাথে না থাকলে যা হয়!
শেষদিকে আক্রমণে ধার বাড়াতে আঞ্জেলা ডি মারিয়াকে উঠিয়ে পাভন এবং মেজাকে তুলে হিগুয়েনকে নামালেও আইসল্যান্ডের রক্ষণ ভেদ করতে পারেননি কেউ। ফলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গতবারের রানার্স-আপদের।