২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের সেই আলোচিত আর্জেন্টেটিনার ফুটবল দলের সমর্থক গোপল চন্দ্র শীল এবার ফ্রি-তে চুল কাটছেন আর্জেন্টিনাভক্ত শিশুদের। আর্জেন্টিনাভক্ত শিশুদের টাকা ছাড়াই চুল কেটে দিচ্ছেন। রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও এলাকার আর্জেন্টিনা ভক্তদের শিশুদের ফ্রি চুল কাটার খবর শুনে প্রতিদিনই তাঁর দোকানে আর্জেন্টিনা ভক্ত শিশুরা ভীড় করছে।
শুধু গোপাল চন্দ্র শীলই নয়, তাঁর দোকানের দুজন কর্মী সুমন এবং সঞ্জয়ও আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। গোপাল চন্দ্রের পাশপাশি তারা ফ্রিতে শিশুদেও চুল কাটছেন। গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোপাল চন্দ্র শীল ও তাঁর দুই কর্মী সুমন এবং সঞ্জয়ের গায়ে আর্জেন্টিনার টি শার্ট পরে চুল কাটছেন। দোকানের ভেতরে ওপরের দিকে ঝুলছে একটি ফুটবল। তার নিচেই দুই পাশে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক বিশ্বসেরা তারকা লিওনেল মেসির পোস্টার। দোকানের ভবনের ওপরে ৩০ ফুট লম্বা আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙানো আছে। নিজের দোকানের এক পাশে লেখা ‘জিতলেও আছি, হারলেও আছি’- আর্জেন্টিনার মোড়।
নিজের দোকানের আরেক পাশে আর্জেন্টিনার পতাকার রংয়ে রাঙিয়ে দেয়া হয়েছে পুরো দেয়াল। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রিকশায় করে দুজন যাত্রী যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে যায় গোপাল চন্দ্রের সেলুনের সামনে। পথচারীরা সেলফি তুলে আর্জেন্টিনার ভক্তের প্রশংসা করে উৎসাহিত করে যান। এভাবেই প্রতিদিনই গোপাল চন্দ্রে এমন পাগলামী দেখে স্থানীয় বাসিন্দারাও উৎসাহ জোগাচ্ছেন। গোপাল চন্দ্রের টাকায় ইতিমধ্যে ১৫ জনের বেশি পথ শিশুকে আর্জেন্টিনার জার্সি উপহার দিয়েছেন।
গোপাল চন্দ্রের পাগলামী প্রসঙ্গে তাঁর দোকানের কর্মী সুমন বলেন, ‘গোপাল দা আর্জেন্টিনার ভক্ত, মেসি ও তাঁর দলকে খুবই ভালোবাসে। পুরো সেলুন দোকানটিকেই আর্জেন্টিনাময় করে তুলেছেন। আমি নিজেও আর্জেন্টিনাভক্ত। তিনি ফ্রিতে মেসিভক্তদের চুল কেটে দিচ্ছেন, উনারটা দেখে আমি ফ্রিতে চুল কেটে দিয়েছি। গতবার আর্জেন্টিনা ফাইনালে পরাজিত হয়ে আমাদের স্বপ্ন ভঙ্গ করলেও এবার আমরা নিশ্চয়ই বিশ্বকাপ জিতবো। এমনই কথা শুনে পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা গোপাল চন্দ্র শীলের চোখ মুখ যেন খুশিতে আত্মহারা।
সুমনের প্রত্যাশাটাকে সত্যি হবে জানিয়ে গোপাল চন্দ্র বলেন, আর হতাশা নয়, মেসির জন্য বিশ্বকাপ দরকার। আমাদের মতো আর্জেন্টিনা ভক্তদের জন্য বিশ্বকাপ দরকার। পুরো দোকানজুড়ে আর্জেন্টিনাময়, আর ফ্রিতে চুল কাটা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আর্জেন্টিনাকে ভালোবাসি বলেই আর্জেন্টিনাভক্ত শিশুদের ফ্রিতে চুল কেটে দেই। গতবারও বিশ্বকাপের সময় ফ্রিতে চুল কেটেছিলাম শিশুদের। তবে কয়েকজন শিশু ব্রাজিলের ভক্ত তাদের টাকা ছাড়া চুল কেটে দিয়েছি। আমার সঙ্গে অনেকেই ছবি তুলে যায়, দোকানের ছবি তোলে, ভালোই লাগে দাদা। ননী গোপাল, পঙগজ শীল, সম্ভু শীলসহ অনেকেই গোপালকে নানাভাবে সমর্থন করে যাচ্ছেন। গোপাল চন্দ্রের দোকানের মোড়টি এখন ধীরে ধীরে আর্জেন্টিনার মোড় হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।