সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। ফেসবুকে প্রেমিককে লাইভ ভিডিও কল করে আত্মঘাতী হল প্রেমিকা।
মৄত সেই প্রেমিকার নাম নাম মৌসুমী মিস্ত্রি। সে সোনারপুর কামরাবাদ স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুরের বৈদ্যপাড়ায়।
জানা যায়, আত্মহত্যা করার সময় মৌসুমী মিস্ত্রি ফেসবুক লাইভ করছিলেন, তখন অন্যপ্রান্তে ছিলেন তার সেই প্রেমিক। আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে গলায় ওড়নায় ফাঁস লাগানো মাত্রই প্রেমিক মোবাইল বন্ধ করে দেন। তদন্তে নেমে পুলিশ আত্মঘাতী মৌসুমীর মোবাইলের সূত্রেই ‘আরিয়ান’ নামের সেই তরুণকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোনারপুরেরই ঘাসিয়াড়ার বাসিন্দা আরিয়ান নামে এক যুবকের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। গত শনিবার দুপুরে এক বান্ধবীর ফোন পেয়ে তাড়াহুড়ু করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মৌসুমী। বিকেল পাঁচটার মধ্যে তার বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও সময়মতো ফেরেনি সে।
অবশেষে সন্ধ্যা ছয়টায় বাড়িতে ফেরে মৌসুমী।
বাড়িতে ফেরার পর থেকেই মৌসুমী চুপচাপ ছিল বলে দাবি করেন মৌসুমীর মা শম্পা মিস্ত্রি। তার সঙ্গেও সেভাবে মেয়ে কথা বলেনি বলেই জানিয়েছেন তিনি। মৌসুমীর মা আয়ার কাজ করেন। তিনি সাড়ে ছয়টার নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। মৌসুমির বাবা ও ভাই অন্যত্র থাকেন। বাড়িতে একাই ছিল সে।
স্থানীয়রা জানায়, রাতের দিকে পাড়ার একটি জলসাতেও যায় মৌসুমী। ফিরে এসে রাতের খাওয়া-দাওয়া করে প্রতিদিনের মতো দরজা বন্ধ করে দেয় সে। কিন্তু প্রতিদিন সকালে আটটার মধ্যে উঠে পড়লেও, রবিবার ঘুম থেকে ওঠেনি মৌসুমী।
অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়াশব্দ না পাওয়ায়, জানালা দিয়ে তাকে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ দেখতে পান বাড়ির লোক। খবর দেওয়া হয় সোনারপুর থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মৌসুমীর ঘরেই তার মোবাইলটি পাওয়া যায়। তখনও মোবাইলে ফেসবুক লাইভ অন করা ছিল। সেখানেই তার আত্মহত্যার ভিডিও দেখতে পায় পুলিশ এবং পরিবারের সদস্যরা৷ ঘটনার আগে আরিয়ানের সঙ্গে সোশ্যাল সাইটে তার দীর্ঘক্ষণ কথা হয় বলে জানা গেছে। সম্ভবত প্রেমিকের সঙ্গে লাইভ কল চলাকালীনই আত্মহত্যা করে মৌসুমী।
আরিয়ান বিষয়টি জানলেও কাউকে কিছু কেন জানায়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনায় মৌসুমীর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।