সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের উপশহরের এবিসি পয়েন্টে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন কোরআনে হাফেজ মাওালানা এখলাছুর রহমান (২৪)।
সন্ত্রাসী হামলায় আহত হাফিজ এখলাছুর রহমান জকিগঞ্জ নিয়াগুল গ্রামের মৃত আব্দুল মালিকের পূত্র। তিনি উপশহরে এবিসি পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকার একটি বাসায় ভাড়াটিয়া ছিলেন। সম্প্রতি বাসা পরিবর্তন করে শিবগঞ্জ এলাকায় চলে যান তিনি।
কিন্তু তার বাসার মালামাল বহনের জন্য ঠেলা ভাড়া নিতে গিয়ে গত ১ জুন দুপুরে বিপত্তিতে পড়েন তিনি। এবিসি পয়েন্ট এলাকার ঠেলাগাড়ি ড্রাইভার অতিরিক্ত ভাড়া দাবী করে। তিনি এতে অনিহা দেখালে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে তারা। তাকে বলে এই এলাকার সকল ভ্যান আমাদের নিয়ন্ত্রনে চলে। আমাদের ভ্যান ছাড়া কোন এলাকার ভ্যান দিয়ে মালামাল পরিবহন করতে পারবে না।
জবাবে এখলাছ বলেন, যে ভাড়া নায্য দাবী করবে আমি তাকে দিয়েই আমার মালামাল পরিবহন করাব। তখন তারা বলে আমাদের ভ্যান ছাড়া কোন এলাকার ভ্যান দিয়ে মালামাল পরিবহন করলে তোমাকে দেখে নেব।
পরবর্তীতে ৩ জুন রবিবার বেলা ২ টার সময় অন্য ঠেলা গাড়ি নিয়ে এখলাছ বাসার মালামাল আনতে গেলে, পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী তার উপর আকস্মিক হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে উর্পযুপুরি কুপায়।
এসময় ব্যাংক থেকে উত্তোলিত নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা হচ্ছে ঠেলা আরজুসহ ৭/৮ অজ্ঞাত যুবক।
পরে জনতা আহত এখলাছকে ওসমানী হাসপাতলে দ্রুত প্রেরন করে। তাকে হাসপাতালের ৪র্থ তলার ৫ নং ওয়ার্ডে পেয়িং বেড নং ৩ এ তাকে ভর্তি করে ৩ দফা অপারেশন করা হয়।
হাফিজ এখলাছের আহত হওয়ার খবর শুনে তাকে দেখতে ওসমানী হাসপাতলে ছুটে যান শাহজালাল উপশহরের সাবেক কাউন্সিল এড. সালেহ আহমদ সেলিম। তখন হাফিজ তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এবং তার উপর হামলার বিবরন দেন।
সব শুনে এড. সালেহ আহমদ সেলিম তাকে আশ্বস্ত করে বলেন, হামলাকারী যেই হোক তাকে আইনানুগ শাস্তির জন্য আপনি পদক্ষেপ নিন আমি আপনার পাশে আছি।
এবিষয়ে হাফিজ এখলাছের ভাই রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এক শ্রেনী উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি তারা আমাদের বড় ভাই এবং আমাদের এলাকার কতিপয় যুবককে জড়িয়ে মিথ্যে গল্প প্রচার করছে তা আদৌ সত্যি নয়।
এ হামলার সম্পর্কে সন্ত্রাসী হামলায় আহত হাফিজ এখলাছ কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত বিবরন তুলে ধরেন। তাকে সাউথ সুরমা নিউজ24.কমে প্রচারিত নিউজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন নিউজটি সত্যের অপলাপ মাত্র। এতে সত্যের সাথে মিথ্যে মিশিয়ে প্রচার করা হয়েছে। আমি আরজু ব্যতিত আর কারো নাম বলিনি। আমি নিজে নিউজটি দেখে হতবাক কারন এড. সেলিম আমার অত্যান্ত শ্রদ্ধাভাজন বড় ভাই, আমার আহতের খবর শুনে ছুটে এসেছেন আমাকে দেখতে অথচ তাকে এবং আমার এলাকার ছোট ভাইদের জড়িয়ে মিথ্যে নিউজ প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পুর্ন মিথ্যে এবং বানোয়াট।
এব্যাপ্যারে এড. সালেহ আহমদ সেলিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনা অত্যান্ত মর্মান্তিক যে, উপশহরের মতো শান্তিপ্রিয় এলাকায় এরকম একটি নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটেছে তাও আবার আমার এক ছোট ভাই এবং কোরআনে হাফিজের উপর। আমি এই ঘটনায় নিন্দার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গেছি তাকে দেখতে এবং তাকে আশ্বস্ত করেছি অপরাধিদের শাস্তির ব্যপ্যারে আইনানুগ যে কোন পদক্ষেপে আমি তার পাশে আছি। সেই সাথে এই ঘটনাকে পুজি করে দু একটি অনলাইন পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যে নিউজ প্রচার সম্পর্কে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না। আর সেই আয়না যদি খারাপ হয়ে যায় তবে সামাজিক অবক্ষয় নিশ্চিত। তাই সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনে এগিয়ে আসতে হবে। যে কোন খবর প্রকাশের পুর্বে তার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
এব্যাপারে উপশহর পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ রাজিব রায় বলেন, ঘটনাটির ব্যাপারে তারা শুনেছেন , তবে এখনও কোন অভিযোগ তাদের নিকট আসেনি।