চট্টগ্রামে নগরীর সল্টগোলা এলাকায় নিজ বাসায় রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দী ২৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুন হয়। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন করে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে পতেঙ্গা ও বন্দর থানায় রাতভর টানা অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ ইপিজেড থানাধীন বেপজা আবাসাকি এলাকা থেকে জিকু রায় চৌধুরীকে (১৬), বন্দর থানাধীন ২ নং মাইলের মাথা এলাকার নতুন মসজিদ সংলগ্ন শামসু হাজীর বাড়ি থেকে জয় বড়ুয়া চৌধুরীকে (১৯) এবং বন্দর থানাধীন সল্টগোলা ক্রসিং ধুপপুল কোরবান আলী শাহ মাজার লেইন সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রতীক মজুমদারকে (১৬) গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি বন্দর থানাধীন মাইলের মাথাস্থ হাজী শামসুল হকের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক সদীপ কুমার দাসের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুকুর থেকে উদ্ধারকৃত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা
সদীপ কুমার দাস বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। ২৯ লাখ টাকা ছিনাইয়ের লোভে তারা সজল নন্দীকে খুন করে। এত কম বয়সী তরুণদের এমন লোভী মানসিকতা আমাদের অবাক করে। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।
’
পিবিআই সূত্রে জানা যায়, আসামীগণ অকপটে স্বীকার করে যে, ‘প্রতীক মজুমদার নিহত সজল নন্দীর ছেলে সৈকত নন্দীর বন্ধু। সজল নন্দী ব্যাংক থেকে ২৯ লাখ টাকা লোন গ্রহণ করে। এ কথা সৈকত প্রতীক মুজুমদার জানে সৈকত নন্দীর কাছ থেকে। প্রতীক মজুমদার বিষয়টি অপর দুই বন্ধুকে জানাই। এরপর তারা ২৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মতে, গত ২৭ মে সকাল ৮টায় ব্যাংক কর্মকর্তার স্ত্রী বাসা থেকে চাকরির জন্য বের হলে আসামীরা ভিকটিমের ছেলের সাইকেল ক্রয় করার কথা বলে তার বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় সজল নন্দী তাদের বাসায় প্রবেশ করতে দিলেও তার অফিসে যাওয়ার সময়ই কেন তারা সাইকেল ক্রয়ের জন্য গেল তা নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় জিকু রায় চৌধুরী তালা দিয়ে সজল নন্দীর মাথায় আঘাত করে। তখন তিনি চিৎকার করলে প্রতীক মজুমদার তার মুখ চেপে ধরে এবং অপর দ্ইুজন সজল নন্দীর গা গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে। এ সময় জয় বাড়–য়া চৌধুরী নিউ মার্কেট থেকে ক্রয় করা একটি অত্যাধুনিক ছোরা দিয়ে সজলের গলা কেটে হত্যা করে। তবে আসামীরা ঘরে কাঙ্খিত টাকা না পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার পকেটে থাকা ব্যাংকের যাবতীয় চাবি নিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ মে রবিবার সকালে নগরীর বন্দর থানা সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার নিজ বাসা থেকে রূপালী ব্যাংক কর্মকর্তা সজল নন্দীর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সজল নন্দীর ভাই স্বপন নন্দী বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি মামলা করেন। বন্দর থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই মামলার ছায়া তদন্ত করে।