হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: পবিত্র রামদ্বানকে উপলক্ষ করে এক শ্রেনীর অসাধু ফল ব্যবসায়ী কারনে সিলেট জেলার ফলের বাজারে অপরিপক্ক ও বিষাক্ত আমে সয়লাব। আমের বাজার যেন বিষের বাজারে পরিণত হয়েছে। এ বাজারগুলে থেকেই আম ছড়িয়ে যাচ্ছে সিলেটের গ্রামীন বাজারগুলোতে।
ফলে মানুষের স্ব্যাস্থ্যের জন্য দেখা দিচ্ছে মারাত্বক হুমকি বা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভকব। অসাধু আম ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ ব্যবসা পরিচালনা করছে। জনস্বার্থ বিরোধী এ কাজ বন্ধে প্রশাসনের কোন উদ্দোগ নেই বললেই চলে।
সিলেটের বিভিন্ন আমের আড়তে বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নিজেরা অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ক আমে রাইস মিথানল, কারবাইড সালফেট, ফরমালিন সহ কেমিক্যাল মিশিয়ে আম পাকিয়ে বা আমের রং সুন্দর করে বিক্রি করছে বাজারে।
প্রতিদিন বাজারে আমের রং ভালো, পাকানো ও আম যাতে না পচে তার জন্য এখানে রাত দিন সমান তালে হাজার হাজার মন আমে স্প্রে করে মেশানো হচ্ছে ভারত থেকে চোরাই পথে আমদানি করা রাইস মিথানল, কারবাইড সালফেট, ফরমালিন সহ বিভিন্ন প্রকারের বিষাক্ত কেমিক্যাল। এরপর ফ্যানের বাতাসে কিছুক্ষণ শুকানোর পর প্লাষ্টিক কার্টুন অথবা ক্যারেটে পুরনো খবরের কাগজ মুড়িয়ে প্যাকিং বিক্রির জন্য পাঠানো বিক্রেতাদের কাছে। যা দেহের বিভিন্ন কোষ ধ্বংস করে মানুষকে দ্রুত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
সিসিকের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, কিছু কিছু মৌসুমী ও আড়তদার অধিক লাভের আশায় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে আম বাজারজাত করছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এ সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রন করা হবে।
ডাঃ আক্তার আহমেদ বলেন, বর্তমান সময়ে মানুষ বাজারে বিভিন্ন আমের সাথে বিভিন্ন রাসায়নিক ক্ষতিকর দ্রব্যাদি মিশাচ্ছে। যে ক্ষতিকর দ্রব্যাদি মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যে গুলো মানুষের শরীরে শ্বাসকষ্ট, চামড়া জাতীয় রোগ তৈরি করতে পারে। প্রজনন ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এমনকি গর্ভবর্তীদের গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো এ জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্যাদিতে ফার্সন জনিক প্রভাব আছে অর্থাৎ শরীরের ফুসফুস, কিডনি ও ত্বক সহ অন্যান্য জায়গায় ক্যান্সার জাতীয় ক্ষতিকর প্রভাব তৈরী করতে পারে।
আম ক্রেতা জলিল মিয়া জানান, আমি বন্দর বাজারে খরছ শেষে বাসায় ফেরার পথে সুন্দর আম দেখে কিনতে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আমের নাম আর দাম কত? বিক্রেতা বলে হিম-সাগর আর দাম ১৩০টাকা, আমার সন্দেহ হলে বিক্রেতা বললাম আমটি আমাকে অর্ধেক করে কেটে দেখান। সে আমার সাথে বাকবিন্ডায় লিপ্ত হয়। অবশেষে বাধ্য হয়ে অর্ধেক করে কাটে, কাটার পর দেখা যায় আমের বড়া এখনো পরিপক্ক হয়নি।
নিম্নে আমের নাম ও সরকারীভাবে বাজারজাতের তারিখ উল্লেখ করা হল।
গোবিন্দভোগ ২৫ মে‘র পর। গুলাব খাস ৩০ মে‘র পর। গোপাল ভোগ ১লা জুনের পর রাণী পছন্দ ৫ জুনের পর। হিমসাগর বা ক্ষিরসাপাত ১২ জুনের পর। ল্যাংড়া ১৫ জুনের পর। লক্ষণভোগ ২০ জুনের পর। হাড়ি ভাঙ্গা ২০ জুনের পর। আম্রপালী ১লা জুলাই থেকে। মল্লিকা ১লা জুলাই থেকে। ফজলি ৭ জুলাই থেকে এবং আশ্বিনা ২৫ জুলাই থেকে।