ভালোবাসার রহস্য বুঝি এখানেই! ভালোবাসা থেকে ঘৃণা আর তা থেকেই খুন। অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটিই বাস্তব হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েক দশকে যত নারী খুন হয়েছেন, তাদের খুনীদের অধিকাংশই কোনো না কোনো সময় তাদের ভালোবাসার মানুষ ছিলেন।
ভালোবাসার মানুষের হাতেই খুন হচ্ছে অধিকাংশ নারী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত কয়েক দশকের খুনের পরিসংখ্যানের এ বিষয়টি অনেকেরই অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) গবেষকরা এ বিষয়টিতে নিশ্চিত হয়েছেন।
এ পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে গবেষকরা বলছেন, একজন নারীর খুন হওয়ার আশঙ্কা অন্য কারো হাতে নয় বরং ভালোবাসার মানুষের হাতে হওয়ার ভয়ই সবচেয়ে বেশি।
গবেষকরা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে খুন হওয়া ১০,০০০ নারীর তথ্য বিশ্লেষণ করেন। এতে দেখা যায় খুন হওয়া নারীদের ৫৫ শতাংশকেই খুন করেছে তাদের এক সময়ের বয়ফ্রেন্ড, স্বামী অথবা প্রেমিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ ৫৫ শতাংশ খুনের ৯৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই সরাসরি খুন করেছে সেই ভালোবাসার মানুষ বা একসময় তাকে ভালোবাসত এমন মানুষ। বাকি সাত শতাংশ তাদেরই পরিচিত কেউ।
খুন হওয়া নারীদের ৯৮ শতাংশই কোনো না কোনো পুরুষের হাতে খুন হয়।
অপরিচিত মানুষকে ভয় পায় অনেক নারীই। কিন্তু পরিসংখ্যানে বলছে অপরিচিতদের হাতে বিপদের আশঙ্কা পরিচিতদের তুলনায় অনেক কম। একেবারে অপরিচিত মানুষের হাতে নারীর খুন হওয়ার হার মাত্র ১৬ শতাংশ। বাকিরা পরিচিতের হাতেই খুন হয়।
এ ধরনের খুন কি প্রতিরোধ করা সম্ভব? এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১১.২ শতাংশ ক্ষেত্রে সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি ও মতবিরোধ দেখা যায় খুন হওয়ার আগে। আর সে সময়েই যদি বিষয়টি বুঝতে পেরে সতর্ক থাকা যায় কিংবা সম্পর্ক পরিত্যাগ করা যায় তাহলে জীবন রক্ষা করা সম্ভব। এক্ষেত্রে তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে যে, কোন ধরনের আচরণ থেকে বুঝতে হবে তার জীবনহানীর আশঙ্কা রয়েছে।
পুরুষের ক্ষেত্রে অবশ্য পরিসংখ্যানটি ভিন্ন। গবেষকরা বলছেন, প্রায় পাঁচ থেকে সাত শতাংশ পুরুষ নারী অন্তরঙ্গ সঙ্গীর হাতে খুন হয়।
সূত্র : নিউ ইয়র্ক পোস্ট