ঢাকা: কোটা নিয়ে আন্দোলনের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এ পি এম সুহেলের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আজ রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা এ দাবি জানায়।
কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘১৬ মে আমাকে ও নূরুল হককে হত্যার হুমকি দেয়। এরপর শাহবাগ থানায় জিডি করতে গেলে আমাদের জিডি নেওয়া হয়নি। তখন যদি আমাদের জিডি নিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের নিরাপত্তা দেওয়া হতো, তাহলে সুহেলের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলার সাহস পেত না।’
সুহেলকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছে দাবি করে রাশেদ বলেন, হামলাকারীদের পরিচয় পাওয়া গেলেও পুলিশ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা না হলে তাঁরা আবারও আন্দোলনে নামবেন বলে জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র এ পি এম সুহেলের ওপর গত ২৩ মে বিকেলে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে থাকা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে হামলা করা হয়। সেখান থেকে তাঁকে আহত অবস্থায় প্রথমে ধূপখোলার আসগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সুহেল এখনো ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
হুইলচেয়ারে বসে সুহেল সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘সেদিন আমাকে ডেকে বলে, “কোটা আন্দোলন করে তো ভালোই টাকাপয়সা কামাইছিস। আমাদেরও কিছু দে।” এ কথা বলেই শাহরুখ আলম শোভন আমাকে থাপ্পড় দিয়ে গলা টিপে ধরে। আমাকে রড দিয়ে পেটায়, চাকু দিয়ে ঠোঁট কেটে দেয়।’ সুহেল জানান, হামলাকারীদের কয়েকজনকে তিনি চেনেন। এঁদের মধ্যে শাহরুখ আলম শোভন, এস কে মিরাজ, মিনুন মাহফুজ ও বাবু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সুহেল বলেন, তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সুহেলের মা জমিলা বেগম প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর ছেলের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন। বলেন, তাঁর ছেলে যৌক্তিক আন্দোলন করেছে। অন্যায় কিছু করেনি। তিনি কোটা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বলেন।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সুহেলের হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান। তিনি সুহেলকে সুচিকিৎসাসহ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যও বলেন।
কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি নিয়ে মামুন বলেন, ৪৬ দিন হয়ে গেলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আবার আন্দোলনের হুমকি দেন তিনি।