বিশ্বকাপ দেখতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ফুটবলপ্রেমীরা আসবে রাশিয়ায়। তাদের রসনাতৃপ্তির জন্য এখন থেকেই উঠেপড়ে লেগেছে রাশিয়ার রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। নানা দেশের পর্যটকদের তাদের স্বাদ অনুযায়ী পছন্দসই খাবার তুলে দেওয়ার জন্য নতুন নতুন অনেক পদই তৈরি করছে শেফরা। খাবারের নামেও আনা হচ্ছে ফুটবলের ছোঁয়া।
এরই মধ্যে অংশগ্রহণকারী বাকি ৩১ দেশের জাতীয় খাবার কী, সেসব দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস কী, সেসব নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা হয়ে গেছে। মেন্যুগুলোকে তরজমা করা হচ্ছে বিভিন্ন ভাষায়, যাতে পর্যটকদের বুঝতে অসুবিধা না হয়। যেসব শহরে খেলা হবে, সেখানে স্থাপন করা হচ্ছে নতুন নতুন সব ফুড কোর্ট যেখানে থাকবে বাহারি সব খাবার।
রাশিয়ার তাতারস্থান প্রদেশের রাজধানী কাজান। এই তাতাররাই মোগলদের পূর্বপুরুষ। তাই বলা যায়, কাজানের খাবারে হয়তো একটা মোগলাই খুশবু থাকবে! কাজানজুড়ে এখন শুধু প্রথাগত তাতারি মিষ্টি চাকচাক তৈরির সুঘ্রাণ! কালিনগ্রাদে বানানো হচ্ছে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর প্রিয় সব খাবার। কোথাও দর্শনার্থীদের জন্য থাকবে ভালুকের থাবার মতো বড় কাটলেট, কোথাও তাদের গলা ভেজানোর জন্য থাকবে বিশেষ পানীয়র বন্দোবস্ত।
প্রতিটি ম্যাচের দিন সেই শহরে বসবে ফুড ট্রাকের মেলা। এই মেলার বিশেষত্ব এই যে মেলায় থাকবে মোট ১১টা ফুড ট্রাক। একেক ট্রাকে পাওয়া যাবে একেক রকম খাবার। সেই খাবারগুলো আবার শহরের ঐতিহ্যকে বহন করবে। মস্কোর ফুড ট্রাকে থাকবে রাশিয়ান রুটি কালাচ। তাতে থাকবে বিভিন্ন ধরনের পুর, ঘন দুধ থেকে শুরু করে মাছ, অনেক কিছুর পুর ভরা রুটিই থাকবে দর্শকদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য।
বাফেলো উইং বা ঝাল সস মাখানো মুরগির পাখনা ভাজা পানীয়ের সঙ্গে উপাদেয় একটা খাবার। রুশ একটি রেস্তোরাঁয় সুইমিং পুলের পাশে খেলা দেখা, সঙ্গে শরীর ও গলা ভেজানোর বন্দোবস্ত তো আছেই! তারা বাফেলো উইংসের নাম দিয়েছে বুফন উইংস, বিশ্বকাপে আসতে না পারা ইতালির এই কিংবদন্তির সম্মানে। কোথাও মিলবে পনির আর ডিমের পেস্ট্রি, কোথাও বিশাল আকারের গরুর মাংসের কাটলেট, যেটার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিয়ার পো কাটলেট’! রোস্টভ-অন-ডন শহরে নদীর পারে রেস্টুরেন্টে বসে মিলবে তাজা মাছের নানা পদ। রুশ পানীয় ভদকা দিয়ে তৈরি করা মাছের পদ ‘ভদকা ফিশ স্যুপ’ আগ্রহ কাড়তে পারে পর্যটকদের। রুশ অঞ্চলের জনপ্রিয় পদের নাম চিকেন-আ-লা কিয়েভ। মুরগির এই পদের রেসিপিতে কিছুটা পরিবর্তন এনে চিকেন আ-লা মেসি নামে নতুন ফিউশন পদও তৈরি করেছে রুশ শেফরা। তারা মনে করছে, এসব নামের খাবারই আকর্ষণ করবে ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে আসা পর্যটকদের।
সূত্র: তাস