আশা ভোসলে, সমরেশ, প্রসেনজিৎ পেলেন ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার

Slider বিচিত্র

213004_bangladesh_pratidin_pix_Bangabibhushan

বাংলা সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী আশা ভোসলে-কে ২০১৮ সালের ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত করল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক জমকালো অনুষ্ঠানে তার হাতে রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

আশা ভোসলের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
আশা ভোসলে ছাড়াও বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয় অভিনেতা প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি, সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার, রাজ্যটির সাবেক রাজ্যপাল ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন, রাজবংশী ভাষায় সাহিত্য চর্চা ও গবেষণার জন্য গিরীজা শঙ্কর রায়, সাবেক ভারতীয় ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য ও মহম্মদ হাবিব এবং সাঁওতালি ভাষার গবেষক সুহৃদ কুমার ভৌমিক-কে।
অন্যদিকে ‘বঙ্গভূষণ’ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় সংগীতশিল্পী শ্রীরাধা বন্দোপাধ্যায় ও অরুন্ধুতী হোম চৌধুরী এবং আবৃত্তিকার পার্থ ঘোষ-কে।
এর পাশাপাশি কত্থক নৃত্যশিল্পী পন্ডিত বীরজু মহারাজকে তার বাড়িতে গিয়ে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মান জানানো হবে বলে এদিন ঘোষণা দেন মমতা ব্যানার্জি।
পরে মমতা ব্যনার্জি জানান ‘আজকের এই দিনটা সারা পৃথিবীর ইতিহাসে আমাদের সম্মানের দিন। যারা আমাদের পথ দেখায়, আলো দেখায়, যারা আমাদের ভিসন দেয় বা যাঁরা আমাদের ফ্রেন্ড-ফিলোজফার এন্ড গাইড-তারা অনেক সময় ঢেকে যায়, তাদেরকে আমরা অনেকসময় যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে উঠতে পারি না-এটা আমাদের ব্যর্থতা। কিন্তু আজ সমাজের সেই বিশিষ্টজনেদের বঙ্গবিভূষণ ও বঙ্গভূষণ সম্মান জানাতে পেরে আমরা গর্বিত’।
সঙ্গীতে আশা ভোসলে’র অবদানের কথা স্মরণ করে মমতা বলেন ‘তিনি (আশা দি) আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে কষ্ট করে আজ এখানে উপস্থিত হয়েছে। তাই আমরা ধন্য।
তার অবদান কি কখনও ভোলা যায়। বাংলায় কত গান গেয়েছেন। বাংলার মাটির সাথে তার পারিবারিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগও রয়েছে’।
কথা সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘যাঁর লেখা, ভাষা, কথা, সাহিত্য প্রেরণা আমাদের মনে সবসময় একটা উন্মাদনা সৃষ্টি করে। দেরীতে হলেও তাকে সম্মান জানাতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত। যদিও আরও আগে এই সম্মাননা জানানো উচিত ছিল বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাকে সারা বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানী বলে অভিহীত করে মমতা বলেন ‘বাংলার মেধা আজও সারা পৃথিবীকে পথ দেখায়। গবেষক থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী, অধ্যাপক, শিল্পী প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদেরকে বাদ দিয়ে পৃথিবী চলে না। পৃথিবীকে আমরা পথ দেখাই’।
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শেষে তারই অনুরোধে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন আশা ভোসলে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পরই সমাজে বিশেষ অবদানের জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এই সর্বোচ্চ সম্মাননা দিয়ে আসছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। সর্বপ্রথম এই পুরস্কার পান বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী অমলা শঙ্কর। এরপর বিভিন্ন সময়ে প্রয়াত সংগীতশিল্পী মান্না দে, প্রয়াত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, প্রয়াত সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগম, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী, রঞ্জিত মল্লিক, চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ, সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী সহ সমাজের বিশিষ্টদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *