মেঘনা নদী পারাপারে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাট লঞ্চ ঘাটে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। চাহিদার তুলনায় লঞ্চ সার্ভিস চালু না থাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্পিড বোট ও ট্রলার যোগে উত্তাল মেঘনা ফাঁড়ি দিচ্ছেন তারা।
সি-ট্রাকেও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন গুণ বেশি যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে ওই নৌ রুটে। এ সুযোগে সংশ্লিষ্টরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে যাত্রীদের ক্ষোভ রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঠেকাতে দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান দাবি এখন দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষের।
বিআইডব্লিউটিসি ও লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর- চট্রগাম ও ভোলা-বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত সুবিধায় ২০০৫ সালে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাটে লঞ্চ সার্ভিস চালু করা হয়। এর পর থেকে কুতবদিয়া ও পারিজাদ নামের দুটি লঞ্চ ও খিজির-৫, খিজির-৭ খিজির-৮ এবং সুকান্ত বাবু নামের ৪টি সি ট্রাক নিয়মিত চলত ওই নৌ রুটে। বর্তমানে খিজির -৭ ও ৮ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। একই সঙ্গে কুতুবদিয়া লঞ্চটি ও অচল রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে এসব নৌযান বন্ধ থাকলেও কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে করে এই ঘাটে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের যে চাপ ও চাহিদা তা পূরণ হচ্ছেনা বলে জানান যাত্রীরা।
তারা বলেন, লঞ্চ ও সি-ট্রাকের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় তাদের। অনেকেই জানান, জরুরি প্রয়োজন কিংবা বিশেষ কাজে বাধ্য হয়ে আইন অমান্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্পিড বোট ও ট্রলার যোগে উত্তাল মেঘনা ফাঁড়ি দেন তারা। প্রতিদিন ৫-৬ টি ট্রলার ছেড়ে যায় ভোলা ও বরিশালের উদ্দেশ্যে। আবার সি-ট্রাকেও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন গুণ বেশি যাত্রী পারাপার করতে প্রতিনিয়ত দেখা যায়। এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। ১২০ টাকার পরিবর্তে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যাত্রীরা।
ঘাট কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা বন্ধসহ মুল ফটকে ময়লা আবর্জনার স্তুপ সরানোর দাবি জানান এলাকাবাসী ও যাত্রীরা। একই সঙ্গে তারা বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ওই রুটে আরো লঞ্চ বাড়ানোর দাবি করেন।
এসব অভিযোগ ও অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঘাট ইজারাদার সংশ্লিষ্ট কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি। ঘাটের মুল ইজারাদার স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আলমগীর হোসেন দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, ঝুকিপূর্ণ পারাপারে যাত্রীদের সচেতন হতে হবে। শীঘ্রই অবৈধ নৌযান চলাচল বন্ধসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।