কিউবায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শতাধিক নিহত: রাষ্ট্রীয় টিভি

Slider সারাবিশ্ব

117982_v

ঢাকা: কিউবার রাজধানী হাভানায় যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় শতাধিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল কিউবা টিভি। হাভানার প্রধান বিমানবন্দর থেকে ১১৪ আরোহী নিয়ে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই অভ্যন্তরীন ওই ফ্লাইটটি বিধ্বস্ত হয়। এর মধ্যে ১০৫ জন যাত্রী ছিলেন। আর ক্রু ছিলেন ৯ জন। দেশটির প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল জানিয়েছেন, আরোহীদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন তিন জন।
কিউবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, হাভানা থেকে দেশটির পূর্বে হলগুইন শহরে যাচ্ছিল ফ্লাইটটি। ‍উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয় বোয়িং ৭৩৭ মডেলের উড়োজাহাজটি।

বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমানে আগুন ধরে যায়। আগুণ নিয়ন্ত্রণে আনার পর উদ্ধারকর্মীরা মরদেহগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন। প্রেসিডেন্ট দিয়াজ ক্যানেল আরো জানিয়েছেন, বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিধ্বস্ত বিমানের ধংসাবশেল আনুমানিক ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। বিধ্বস্ত হওয়ার জায়গাটি কৃষিপ্রধান এলাকা বোয়েরোস। সেখানকার এক রেস্তোরা মালিক জিলবার্টো মেনেন্দেজ বলেন, ‘আমরা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পাই। এরপর দেখলাম ঘন কালো ধোয়াঁ উপরে উঠছে।’

হাভানার কালিক্সটো গার্সিয়া হাসপাতালের পরিচালক কার্লোস অ্যালবার্টো মার্টিনেজ রয়টার্সকে বলেন, দূর্ঘটনায় আহত ৪ ব্যক্তিকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি তিনজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনজনই নারী।

মেক্সিকানি এয়ারলাইন দামোজের কাছ থেকে ফ্লাইটটা লিজ নিয়েছিল কিউবানা এয়ারলাইন। বিধ্বস্ত ফ্লাইটের গন্তব্য হলগুইনে কিউবার অন্যতম আকর্ষনীয় সমুদ্রসৈকতগুলো রয়েছে। পর্যটকদের কাছে স্থানটি খুবই জনপ্রিয়।

কিউবানা এয়ারলাইন এ দূর্ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয় নি। অন্যদিকে দামোজের এক প্রতিনিধি মেক্সিকো থেকে বলেন, ‘সঠিক তথ্য সরবরাহের স্বার্থে আমরা যা কিছু পারছি তথ্য সংগ্রহ করছি ‘।

ফ্লাইটের আরোহীদের জাতীয়তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় নি। তবে, স্থানীয় খবরে বলা হচ্ছে ক্রুরা ছিলেন সবাই বিদেশি নাগরিক। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটগুলোর তথ্যমতে সিউই৯৭২ নামের ফ্লাইটটি হাভানা থেকে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার সময় উড্ডয়ন করে।

এদিকে, মেক্সিকো সরকার তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, বিমানটি বোয়িংয়ের ৭৩৭-২০১ মডেলের যা ১৯৭৯ সালে তৈরি। অর্থাৎ বিমানটির বয়স আনুমানিক ৩৯ বছর।

বিমানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এক টুইটে বলেছে, ‘আমরা কিউবায় হওয়া দূর্ঘটননার খবর জেনেছি। নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই কিউবার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সালভাদর ভালদেজ মেসা কিউবানা এয়ারলাইন্সের মালিকপক্ষের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে জনসাধারণের নানা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেন। কিউবানার সেবা নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এ বছর অভ্যন্তরীণ বহু ফ্লাইট বাতিল হওয়া এবং ফ্লাইট পরিচালনায় দীর্ঘ সময়ক্ষেপন। প্রতিষ্ঠানটির ভাস্য হলো, এ সমস্যাগুলোর জন্য দায়ী তাদের উড়োজাহাজগুলোর কারিগরী নানা ত্রুটি।

কিউবায় সর্বশেষ প্রাণহানি হওয়া বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ছিল ২০১৭ সালে। সেভার সামরিক িএকটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে আরোহী ৮ জনের প্রত্যেকে মারা যান। আর ২০১০ সালে বাণিজ্যিক এইরো ক্যারিবিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়ে ৬৮ আরোহীর সবাই নিহত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *