৩ টি উদ্ভাবনী ক্যাটাগরিতে আইটেক্স অ্যাওয়ার্ড পেল এটুআই

Slider তথ্যপ্রযুক্তি

081503_bangladesh_pratidin_itex-award

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম শনিবার মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ইনভেনশন, ইনোভেশন এন্ড টেকনোলজি এক্সিবিশন (আইটেক্স)-২০১৮ এ ৩ টি উদ্ভাবনী ক্যাটাগরিতে আইটেক্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ অর্জন করেছে।

এটুআই প্রোগ্রাম এই প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ইনভেনশন, ইনোভেশন এন্ড টেকনোলজী এক্সিবিশন (আইটেক্স) অংশগ্রহণ করেছে।

এটুআই ‘সেন্ট্রালাইজড নিবুলাইজিং সিস্টেম’ এবং ‘ফুয়েল ফ্রম প্লাস্টিক’ এর জন্য যথাক্রমে ‘বায়োটেকনোলজি, হেলথ ও ফিটনেস’ এবং ‘এনভায়রনমেন্টাল রিনিওবেল এনার্জি’ এ দুইটি ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদক অর্জন করেছে এবং ‘স্পেশাল কেয়ার ও চাইল্ড কেয়ার’ ক্যাটাগরিতে ‘পোর্টেবল ইনফ্যান্ট ইনকিউবেটর’ প্রজেক্টের জন্য রৌপ্য পদক অর্জন করেছে।

অনুষ্ঠানে প্রায় এক হাজারের অধিক বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রজেক্ট নিয়ে ২৩টি দেশ অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে ৬২টি প্রজেক্ট স্বর্ণ ও ৭৩টি প্রজেক্ট রৌপ্য পদক অর্জন করেছে। এটুআই এর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন এটুআই এর ইনোভেশন এক্সপার্ট ফারুক আহমেদ জুয়েল, ইনোভেটর আনোয়ার হোসেন এবং তৌহিদুল ইসলাম।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইনভেন্টরস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে মালয়েশিয়ান ইনভেশন এন্ড ডিজাইন সোসাইটি প্রতি বছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। গত ১০ থেকে ১২ মে পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আইটেক্স-২০১৮ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য হল উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন করা, তারা যেন তাদের সৃজনশীল বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারগুলোকে বাণিজ্যিকভাবে রূপান্তর করতে পারেন।

পরিবেশবাদীদের বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯ মিলিয়ন পলিথিন আমাদের চারপাশে ফেলে দেয়া হয় যার মধ্যে মাত্র ১০% ডাস্টবিনে ফেলা হয়। উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ‘প্লাস্টিক থেকে জ্বালানি’-র মাধ্যমে পলিথিনকে জ্বালানীতে রূপান্তরিত করা যায়। প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর একটি দ্রব্য, যা সঠিক উপায়ে অন্য একটি শক্তিতে রূপান্তরিত করা হলে বাংলাদেশ বর্জ্যমুক্ত করার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা যাবে।

উল্লেখ্য, এর ফলে ৩০ সেন্ট মূল্যের কাঁচামালকে ১.১০ ইউএস ডলারের জ্বালানিতে রুপান্তরিত করা সম্ভব। অন্যদিকে হাসপাতালগুলোতে নেবুলাইজেশন সেবা প্রদানের জন্য প্রত্যেকটি রোগীর জন্য একটি সম্পূর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বরাদ্দ করা থাকে। এতে করে একাধিক রোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে সবাইকে একসাথে নেবুলাইজ করা যায় না। কিন্তু সেন্ট্রাল নেবুলাইজ সিস্টেম সহজেই গ্রামীন হাসপাতালে স্থাপন করা যেতে পারে এবং গ্যাস সরবরাহের একক উৎস থেকে একাধিক রোগীকে নেবুলাইজ করা সহজসাধ্য হবে। এটি সৌর বিদ্যুত দ্বারা চালিত এবং এটি অনিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এলাকায় কাজ করতে পারে ফলে খরচ ও কম হয়। সময়ের আগে জন্ম নেয়া ও কম ওজনের শিশুদের জন্য ‘ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার’ হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। মাদার ক্যাঙ্গারু নামের এই মেডিকেল ডিভাইসটির বর্তমান বাজারমূল্য যেখানে ৫-৬ লাখ টাকা, সেখানে পোর্টেবল ইনফ্যান্ট ইনকিউবেটর ডিভাইসটির খরচ পড়বে মাত্র ৩০-৪০ হাজার টাকা। বাজারে প্রচলিত যন্ত্রটি যেখানে ১ জনকে সেবা দেয়, সেখানে এটি সেবা দেবে ১০-১২ জনকে। মেরামতের সহজ সুযোগ ছাড়াও এতে রয়েছে মোবাইল মনিটরিং এর মাধ্যমে দূরচিকিৎসারও সুযোগ। এই উদ্ভাবন ২০৩০ এর এসডিজি অর্জনে সুদূর প্রসারী ভূমিকা রাখতে পারবে এবং নিশ্চিত হবে নিরাপদ মাতৃত্ব এবং শিশুর বেড়ে উঠা।

উল্লেখ্য, পুরস্কার প্রাপ্ত ৩ টি উদ্ভাবন এটুআই এর ইনোভেশন ল্যাব (আই-ল্যাব)-এর মাধ্যমে আইডিয়াগুলো পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নযোগ্য করে তৈরী করা হয়েছে। ইনোভেশন ল্যাব মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে উদ্ভাবনী মূলক কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে প্রযুক্তিপ্রেমী মানুষদেরকে সমন্বিত করা। প্রযুক্তিচর্চার প্রসার ঘটিয়ে, উদ্ভাবনী ধারণা ও প্রকল্প সমূহ প্রয়োগ করে নাগরিকের দ্রুত এবং সহজ সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা এবং দেশীয় প্রযুক্তিকে সমৃদ্ধ করা। ইনোভেশন ল্যাবের মাধ্যমে সকল শ্রেণী পেশার মানুষ, যারা প্রযুক্তি নিয়ে চিন্তা করেন, তরুণ প্রজন্ম, প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনী ধারণা সমূহকে প্রটোটাইপ থেকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য সকল ধরণের গবেষণা করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়। এছাড়া উদ্ভাবকদের নিজস্ব উদ্ভাবনগুলোর মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের জন্য কপিরাইট ও পেটেন্ট এর ব্যবস্থা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *