টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকার দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে দুই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বুধবার সকালে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম এমপি রানাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে টাঙ্গাইলের দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় এমপি রানাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। এছাড়া এমপি রানার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, এমপি আমানুর রহমান খান রানা আগে থেকেই টাঙ্গাইলের মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় এমপি রানাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের ওসি অশোক কুমার সিংহ এ আবেদন করেন। আবেদনের শুনানীর জন্য বুধবার তারিখ রাখেন আদালত। একইদিন টাঙ্গাইলের বহুল আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যামামলার সাক্ষ্যগ্রহনের জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল।
বুধবার সকালে এমপি রানাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতে এমপি রানার উপস্থিতিতে তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। একই সাথে এমপি রানার পক্ষে তার জামিনের আবেদন করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়া। বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম শুনানী শেষে এমপি রানাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন।
টাঙ্গাইল ডিবি’র ওসি অশোক কুমার সিংহ জানান, দুই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় এমপি রানাকে গ্রেফতার দেখানোর পর আমরা তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি। এই রিমান্ড বিষয়ে কবে শুনানী হবে তা বৃহস্পতিবার জানা যাবে।
ডিবি’র ওসি জানান, এছাড়া টাঙ্গাইলের ঘাটাইল জিবিজি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে হত্যা চেষ্টা মামলায় ঘাটাইল আমলী আদালতে এমপি রানাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আরেকটি আবেদনের শুনানী হবে বৃহস্পতিবার।
অশোক কুমার সিংহ বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে।
এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, এমপি রানার নির্দেশে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল।