তিন বছর ধরে ছাত্রীকে ধর্ষণ, শিক্ষক গ্রেপ্তার

Slider নারী ও শিশু

116335_116172_lilota

গলাচিপা(পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর গলাচিপায় প্রাইভেট পড়ানোর নামে তিন বছর ধরে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মোঃ রুহুল আমিন পেয়াদার নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই শিক্ষককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। ধর্ষক শিক্ষক পুলিশের কাছে এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন। পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শিক্ষককে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।

মামলার বিবরণ, পরিবার ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন পেয়াদা (৩২) গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের আঃ করিম পেয়াদার ছেলে। তিনি ২০০৪ সালে উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়াবাড়িয়া এবি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়। এর পাশাপাশি সে স্কুলে ইংরেজি বিষয়েরও শিক্ষক। একই স্কুলের ওই ছাত্রী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে শিক্ষক রুহুল আমিনের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়া শুরু করে। এ সময় রুহুল আমিন ছাত্রীটিকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ছাত্রী রাজি না হওয়ায় ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেয়। ভয়ভীতির এক পর্যায়ে তিনি ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত তিন বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে তিনি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছেন। সর্বশেষ বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জনৈক নাসির খানের ফাঁকা বাড়িতে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে শিক্ষক রুহুল আমিন ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ওই ছাত্রী বর্তমানে পটুয়াখালী জেলা শহরের একটি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছেন। কলেজ হোস্টেলের সহপাঠীদের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। এরপর ছাত্রীর মা এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ঘটনাটি পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশকে জানান। পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ শিক্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে গলাচিপা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপরই ওই ছাত্রীর মা সোমবার গলাচিপা থানায় শিক্ষককে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, শিক্ষক রুহুল আমিন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিম ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী পাঠানো হয়েছে।

বর্তমানে স্কুলের অন্যান্য ছাত্রী ও অভিভাবকদের ওপর ঘটনাটি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউসুফ মোল্লা জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের জরুরী সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে শিক্ষকতা থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি দেয়া হবে। কোনক্রমেই এ ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *