গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত হওয়ার ক্ষেত্রে ইসির কোনো গাফিলতি নেই: কবিতা খানম

Slider টপ নিউজ

116296_gaji

ঢাকা:গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত হওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো গাফিলতি নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ‘ক্লিয়ারেন্স’ পাওয়ার পর ইসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে থাকে। এরপরও যেকোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে আদালতে যেতে পারেন।

আজ রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।

সংবিধানের ১২৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইয়াছে এমন নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ না দিয়ে কোনো আদালত অন্তর্বর্তী বা অন্য কোনো আদেশ বা নির্দেশ দেবেন না।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করার আগে আদালত ইসিকে নোটিশ দিয়েছিল কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, তৌহিদুল ইসলাম ইসির প্যানেলভুক্ত আইনজীবী। তাঁকে ওকালতনামা দেওয়ার মতো সময়, সুযোগ ইসির হয়নি। তৌহিদ একটি লিখিত কপি পেয়ে শুনানিতে অংশ নেন। কপি পাওয়ার কথা তিনি ইসিকে পরে জানিয়েছেন। শুনানির আগ মুহূর্তে ইসি বিষয়টি জেনেছে।

আদালতের নির্দেশনা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘আদালতের সিদ্ধান্ত যেটা হয়েছে, তা অনার করা উচিত—এটুকু আমি বলতে পারি।’

কবিতা খানম বলেন, কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালতের কাছে যেতে পারেন। আইন তাঁকে সে সুযোগ দিয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, আদালতের আদেশের লিখিত কপি পাওয়ার পর কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, দায় কার এটা বলার সুযোগ নেই। তবে ইসির কোনো গাফিলতি নেই। স্থানীয় সরকারের অনুরোধে ইসি স্থানীয় নির্বাচনগুলো পরিচালনা করে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসি স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছ থেকে দুই দফা অনাপত্তি নিয়েছিল।

এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার গাজীপুর সিটি নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ভোটের মাত্র নয় দিন আগে প্রচারের হুলুস্থুলের মধ্যে গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত হয়।

তিন বছর আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ছয়টি মৌজার জটিলতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা এ বি এম আজহারুল ইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ তদন্ত করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে। চলতি বছরের ৪ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

প্রজ্ঞাপন জারির দুই মাস পর স্থানীয় সরকারের ওই প্রজ্ঞাপন এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোটের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবারও হাইকোর্টে রিট করেন সেই আজহারুল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

আজহারুল ইসলাম সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানের বেয়াই।

১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশনেও ভোট হওয়ার কথা ছিল। জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এই দুই সিটি, বিশেষ করে রাজধানীর উপকণ্ঠে গুরুত্বপূর্ণ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকে নজর ছিল সবার। কারণ, এ নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়তে পারে। তাই সরকারি দল চাইছিল এই নির্বাচনে জাতীয় রাজনীতি সামনে না আনতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতীয় রাজনীতির বিষয়াদি সামনে চলে আসে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নেও দলীয় প্রার্থীর জয় নিশ্চিত ছিল না।

এর আগে গত জানুয়ারিতে তফসিল ঘোষণার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন ওয়ার্ডগুলোর নির্বাচন আদালতের নির্দেশনায় স্থগিত হয়েছিল। তখন নির্বাচন হলে ঢাকা উত্তর সিটিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জয়ের সম্ভাবনা কম ছিল বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *