ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।
আজ সোমবার আবেদনটি করা হয়। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি হিসেবে হাসান উদ্দিন সরকার আবেদনটি করেছন।
আবেদনটি আজই চেম্বার বিচারপতির আদালতে উপস্থাপিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির আইনজীবী।
হাসান উদ্দিন সরকারের আইনজীবী সানজিদ সিদ্দিকী বলেন, আবেদনের জন্য হলফনামা করতে বেলা ১১টার দিকে আদালতের অনুমতি নেওয়া হয়। অনুমতি নিয়ে আবেদনটি দায়ের করা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার গাজীপুর সিটি নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। ভোটের মাত্র নয় দিন আগে হুলুস্থুল প্রচারের মধ্যে গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত হয়।
তিন বছর আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ছয়টি মৌজার জটিলতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা এ বি এম আজহারুল ইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ তদন্ত করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে। চলতি বছরের ৪ মার্চ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
প্রজ্ঞাপন জারির দুই মাস পরে স্থানীয় সরকারের ওই প্রজ্ঞাপন এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোটের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আবারও হাইকোর্টে রিট করেন সেই আজহারুল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
আজহারুল ইসলাম সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানের বেয়াই।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, সরকার নিশ্চিত পরাজয় জেনে নিজেদের লোক দিয়ে কারসাজি করে নির্বাচন স্থগিত করেছে। তিনি দাবি করেন, এটি সরকারের অপচেষ্টা। রিট আবেদনকারী আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা। এখান থেকেও বিষয়টি পরিষ্কার বোঝা যায়।
এ বিষয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া গতকাল রাত পর্যন্ত আসেনি। তবে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ গতকাল বিকেলে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আদালত স্বাধীন। আদালত রায় দিয়েছেন, এ ব্যাপারে সরকারের কিছু করার নেই।
১৫ মে খুলনা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশনেও ভোট হওয়ার কথা ছিল। জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এই দুই সিটি, বিশেষ করে রাজধানীর উপকণ্ঠে গুরুত্বপূর্ণ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিকে নজর ছিল সবার। কারণ, এ নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়তে পারে। তাই সরকারি দল চাইছিল এই নির্বাচনে জাতীয় রাজনীতি সামনে না আনতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতীয় রাজনীতির বিষয়াদি সামনে চলে আসে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নেও দলীয় প্রার্থীর জয় নিশ্চিত ছিল না।
এর আগে গত জানুয়ারিতে তফসিল ঘোষণার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন ওয়ার্ডগুলোর নির্বাচন আদালতের নির্দেশনায় স্থগিত হয়েছিল। তখন নির্বাচন হলে ঢাকা উত্তর সিটিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জয়ের সম্ভাবনা কম ছিল বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা ছিল।