ঢাকা: অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় ট্যাক্স ফাইলের বাইরে কোনো সম্পদ নেই বলে দাবি করেন মিজান।
তিনি বলেন, আমার সম্পদের ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। ট্যাক্স ফাইলের বাইরে আমার আর কোনো সম্পদ নেই। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ নিয়ে আমি কিছু বলবো না।
ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ছাড়াও নারীঘটিত একটি অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে এ অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। প্রমাণ পেয়েছেন কিনা তারাই ভালো বলতে পারবেন।
এদিকে সম্প্রতি এক সংবাদপাঠিকাকেও হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এক ভদ্রমহিলার সঙ্গে আমার কথোপকথন হয়েছে। এজন্য আমি স্যরি।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক সচিব শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বলেন, জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পেয়েই আমরা তাকে (ডিআইজি মিজান) ডেকেছি। তিনি তার ট্যাক্স ফাইল ও চাহিদা মতো কাগজপত্র নিয়ে এসেছেন। আরও কিছু কাগজ চাওয়া হয়েছে। তিনি আগামী রোববার (৬ই মে) সেসব কাগজ নিয়ে আবার আসবেন। প্রয়োজনে তার পরিবারের সদস্য বা স্বজন, যেখানে যেখানে টাকা ট্রান্সফার হয়েছে, তাদেরও ডাকা হবে। আইনে সে বিধান আছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা তার বিষয় তদন্ত শুরু করেছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৫শে এপ্রিল দুদকের পাঠানো এক নোটিশে ডিআইজি মিজানকে তলব করা হয়।
উল্লেখ্য, ডিআইজি মিজান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রী মরিয়ম আক্তারকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনেরও অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের প্রমাণ পায় পুলিশের তদন্ত কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। কিছুদিন আগে মিজানুরের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকা প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলেছেন।