যেতে চাইলেন কাশি পাঠানো হলো কাবা

Slider জাতীয়

baba

তিনি যেতে চাইলেন কাশি, তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো কাবা…। সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রফেসর অরুণ চন্দ্র বিশ্বাস পবিত্র হজের জন্য ৫০ দিন ছুটি পেয়েছেন! অথচ তিনি যেতে চেয়েছিলেন ভারতের কাশিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান পরিদর্শনের জন্য।

গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক প্রফেসর অরুণ চন্দ্র বিশ্বাসকে ছয়টি শর্ত দিয়ে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে ছুটি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৩০ এপ্রিল এ ছুটি সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখা-৪ থেকে জারি করা আদেশে (স্মারক নম্বর-৩৭.০০.০০০০.০৮.০১০.৪৩৪) প্রফেসর অরুণ চন্দ্র বিশ্বাসের ছুটি মঞ্জুর করা হয়।

তার সৌদি আরব ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও সময়কালের কথাও উল্লেখ করেছে। এতে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে আগামী ২৫ জুলাই থেকে ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ৫০ দিন অথবা দায়িত্বভার হস্তান্তরের তারিখ হতে ৫০ দিন ছুটি পেয়েছেন প্রফেসর অরুণ চন্দ্র বিশ্বাস।

বি.সি.এস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের এই অধ্যাপককে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে ছুটি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওই প্রজ্ঞাপনের ছয়টি শর্তে বলা হয়— প্রফেসর অরুণ চন্দ্র বিশ্বাস (১৭৯৫) ক. অনুমোদিত সময়ের অতিরিক্ত সময় বিদেশে অবস্থান করতে পারবেন না। খ. দেশে ফিরে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন। গ. এ ভ্রমণে সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ থাকবে না। ঘ. ভ্রমণকালীন দেশীয় মুদ্রায় বেতন ভাতা প্রাপ্য হবেন। ঙ. ভ্রমণ ব্যয় আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শন করতে হবে। চ. অনুমোদিত ছুটির অতিরিক্ত ছুটি ভোগ অপরিহার্য হলে বিধিমোতাবেক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

প্রফেসর অরুণ চন্দ্র বিশ্বাসকে ছুটি দেওয়া নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই আদেশটি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা।

আদেশের সত্যতা সম্পর্কে গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আমি ১ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ভারতে ধর্মীয় উপাসনালয় পরিদর্শনের জন্য অবকাশকালীন ছুটির জন্য আবেদন করেছিলাম। গত ৩০ এপ্রিলের সরকারি আদেশটি আমি দেখেছি। সেখানে দেখা গেছে, আমাকে হজে যাওয়ার জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। এটি সম্ভবত মন্ত্রণালয় ভুল করে দিয়েছে।’

ওই কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন ভুল আগেও করেছে। অরুণ চন্দ্রের এ বিষয়টি আমিসহ অনেকেই অবগত। সম্ভবত মন্ত্রণালয় ভুল করেছে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখা-৪ যে আদেশে অরুণ চন্দ্র বিশ্বাসকে ছুটি দিয়েছে, সেই আদেশেই নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কালেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাছিমা বেগমকেও ওমরা পালনের জন্য ১ জুন থেকে ২১ জুন অথবা হস্তান্তরের তারিখ থেকে ২১ দিন ছুটি মঞ্জুর করা হয়।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমার আদেশের সঙ্গে গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র বিশ্বাসকেও ছুটি দেওয়া হয়েছে। দুজনের একসঙ্গে আদেশ হলেও আমি তাকে চিনি না। তবে একই ক্যাডারের তাই হয়তো একসঙ্গে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *