বাসস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শ্রেণির শ্রমিক নেতাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, বিদেশের কাছে দেশের বিরুদ্ধে বদনামের অশুভ তৎপরতা চালিয়ে কোনো লাভ হবে না। তিনি দৃঢতার সঙ্গে বলেছেন, যত দিন ক্ষমতায় আছেন তত দিন এসব করে কোনো লাভ হবে না।
মহান মে দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যতদিন ক্ষমতায় আছি বাইরের কারো কাছে নালিশ করে কোন লাভ হবে না। আমি জাতির জনকের কন্যা এবং দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবেসেই রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমি যা কিছু করেছি এবং করছি দেশের কল্যাণের জন্যই।’ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত আমাদের এই স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতাকে সমুন্বত রাখা, দেশবাসী এবং দেশকে বিশ্বের দরবারে সম্মানিত করা-এটাই আমার লক্ষ্য। কারো কাছে মাথা নিচু করা নয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের দুর্ভাগ্য আমি বলবো কিছু কিছু লোক শ্রমিক নেতা সাজতে গিয়ে- যারা জীবনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করুক আর নাই করুক শ্রমিকদের উপর একটু খবরদারি করে। আর একটু কিছু হলেই বিদেশীদের কাছে গিয়ে নালিশ করে, আর দেশের বদনামটা তুলে ধরে।
তিনি বলেন, এই বদনামটা তুলে ধরতে গিয়ে হয়তো একখানা টিকিট বিনে পয়সায় পান, বিদেশে থাকার একটু সুযোগ পান, একটু সেখানে যেতে পারেন, কিছু সুযোগ-সুবিধা পান। আর ঐ একটু সুযোগের জন্য দেশের বদনামটা বাইরে যেয়ে করে আসা দেশের জন্য যে কতটা ক্ষতিকারক সেটা তারা অনেকেই বুঝতে পারেন না। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যে।
সরকার প্রধান বলেন, দেশটা আমাদের, এদেশটাকে আমাদেরই গড়ে তুলতে হবে। আর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যত ভালো হবে ততই সকলের কল্যাণ হবে। সকলেরই জীবন মান উন্নত হবে। এই কথাটা বুঝতে হবে, দেশপ্রেম থাকতে হবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান।
আরো বক্তৃতা করেন, এদেশে আইএলও প্রতিনিধি গগন রাজভান্ডারি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান, বিজিএমইএ সভাপতি মো, সিদ্দিকুর রহমান এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ। শ্রম ওকর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজ খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিক পরিবারের সদস্য এবং শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের মধ্যে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে অনুদানের চেকও বিতরণ করেন।
আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রস্তুতি গ্রহণে নেতা-কর্মীদের আহবান তোফায়েলের
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যথাসময়ে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকল দলের অংশগ্রহণে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে মহান মে দিবস উপলক্ষে জেলা শ্রমিক লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি মো: আবু তাহের সভায় সভাপতিত্ব করেন।
তোফায়েল বলেন, কোন তত্তাবধায়ক সরকার এই দেশে আসবেনা। কোন সহায়ক সরকারও আসবেনা। নির্বাচনকালীন বর্তমান সরকার দৈনন্দিন কাজ করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসাবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্বাচনে ভোলায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহবান জানান মন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যারা অতীতে নির্বাচনে অংশ নেননি, নিশ্চয়ই তারা তাদের ভুল উপলব্ধি করেছেন। আগামীতে যদি তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তবে তাদেরই ভুল হবে। আগামী নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক।
মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাশীল ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হবে এই দেশ।
এসময় তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আছে বলেই ভোলা আজ নদী ভাঙ্গছেনা। ব্লক ও জিও ব্যাগের মাধ্যমে টেকসইভাবে নদী পাড় রক্ষা করায় এখানে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এবছরই ভোলা-বরিশাল ব্রীজ নির্মাণের কাজসহ তার সরকারের নানান উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
পরে মন্ত্রী শহরের নতুন বাজারের মনোহরী পট্রীতে শুক্রবার রাতের অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শনে যান এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান। এসময় মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, এই অগ্নিকান্ডে ভোলা শহরের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের সকলের আরো বেশি করে সতর্ক হতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের স্বল্প সূদে ঋণ প্রদান করা যায় কিনা সে ব্যাপারে পরিকল্পনা চলছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু আর্থিক সহায়তা দরকার তা সাধ্যমত করা হবে বলে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান।
এসময় জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম সিদ্দিক, জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, জেলা পূলিশ সুপার মো: মোকতার হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: মোশারেফ হোসেন, পৌর মেয়র মো: মনিরুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি নাজিবুল্লাহ নাজু, সম্পাদক আলী নেওয়াজ পলাশসহ অন্যরা।