বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশি ছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত গবেষক

সারাবিশ্ব

image_109276_0ফের বিশ্বভারতীর এক আবাসিক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। এ বারও অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্র। তবে, এ ক্ষেত্রে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠেনি। বরং ঘটনা জানাজানি হতেই পাঠভবনের অধ্যক্ষ নিজে ছাত্রী ও তার বাবাকে থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশে অভিযোগ করিয়েছেন।

বাংলাদেশের নাগরিক, পাঠভবনের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর অভিযোগ, মোবাইলে জোর করে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে, তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে একাধিক বার ধর্ষণ করা হয়েছে। দিন কয়েক আগে সহপাঠীদের কাছে মেয়েটি জানতে পারে ওই গবেষক তার আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দিয়েছে। এর পরেই ঘটনার কথা পরিবারকে জানান মেয়েটি।

শুক্রবার তার বাবা শান্তিনিকেতনে আসেন। রাতে পাঠভবনের অধ্যক্ষ পার্থ চক্রবর্তীকে নিয়ে বাবার সঙ্গে বোলপুর থানায় অভিযুক্ত মহম্মদ শফিকুল ইসলামের নামে লিখিত অভিযোগ জানান ওই ছাত্রী। রাতেই পুলিশ বাংলাদেশের নাগরিক ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করে।

আটক ছাত্রের দাবি, “সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি চক্রান্তের শিকার।” শনিবার বোলপুরের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম সৌরভ নন্দী জামিনের আবেদন নাকচ করে ধৃতকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

সরকারি আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ), ৩৫৪খ (শ্লীলতাহানি), ৪৩২ (বেআইনি ভাবে আটকে রাখা), ৫০৬ (ভয় দেখানো) ও ৩২৩ (মারধর) ধারায় পুলিশ মামলা করেছে। সোমবার অভিযোগকারী ছাত্রী বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেবেন।”

এসডিপিও (বোলপুর) সূর্যপ্রতাপ যাদব জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃত গবেষকের গুরুপল্লির ভাড়াবাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ, দু’টি মোবাইল, চারটি পেন ড্রাইভ, দু’টি মেমোরি কার্ড-সহ একাধিক সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এ দিনই বোলপুর হাসপাতালে ছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে।

পুলিশ ও বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, একাদশ শ্রেণিতে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বভারতীতে আসেন ওই ছাত্রী। থাকেন পাঠভবনের ছাত্রী নিবাসে। অভিযুক্ত ছাত্র বিশ্বভারতীর সমাজকর্ম বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি শ্রীনিকেতনের পল্লি সংগঠনে গবেষণা করেন। বিশ্বভারতীর খাতায় অভিযুক্তই নির্যাতিতার ‘লোকাল গার্জেন’। তাই মেয়েটির সঙ্গে অভিযুক্ত মেলামেশার সুযোগ পায় বলে জানা গিয়েছে। ওই ছাত্রী এ দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। তার বাবার প্রতিক্রিয়া, “যা বলার লিখিত অভিযোগে আমার মেয়ে জানিয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।”

এ দিকে, ফের ধর্ষণের কথা চাউর হতেই মুখে কুলুপ বিশ্বভারতীর আধিকারিকদের। অথচ এমন ঐতিহ্যপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নিরাপত্তা বারবারই বিঘ্নিত হচ্ছে। কয়েক বছর আগেই সঙ্গীতভবনের এক আবাসিক ছাত্রীকে হস্টেলে ঢুকে গুলি করে খুন করে তার প্রেমিক। গত সেপ্টেম্বরে একই অভিযোগ তোলেন কলাভবনের এক আবাসিক ছাত্রী। এ ক্ষেত্রেও আবাসিক ওই ছাত্রীকে বাইরে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। তখন অবশ্য ঘটনার কথা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ ওঠে উপাচার্য ও কলাভবনের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এ দিন বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের মুখপাত্র সন্দীপ বসু সর্বাধিকারী।

বিশ্বভারতীর শ্রীনিকেতনের ছাত্র পরিচালক অধ্যাপক প্রশান্ত ঘোষ বলেন, “ওই ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *