সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাইরের কোন হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা করানোর জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
গত ২৬ এপ্রিল কারা কর্তৃপক্ষ বেগম জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত কারা চিকিৎসকদের পরামর্শ ও মতামত নিয়ে ওই চিঠিটি পাঠানো হয় বলে সুত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে রোববার রাত ৮টার দিকে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন কে ফোন করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি।
এরআগে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরলেও খালেদা জিয়াকে এ্যাপোলো অথবা ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে কোন চিঠিপত্র গেছে কি-না সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে উল্লেখ করেন। যার কারণে পাঠানো চিঠিতে কি উল্লেখ রয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।
রোববার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান অবশ্য এ প্রতিবেদককে বলেন, ম্যাডামকে এ্যাপোলো অথবা ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে কারাগার থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে চিঠি গেছে, এখন পর্যন্ত এমন কথা আমরা শুনিনি।
তাতে কি বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে যাবেন, প্রশ্ন কাদেরের
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আটকে থাকার কথা বলে বিএনপি মিথ্যাচার করেছে বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের।
বিএনপির অভিযোগ তোলার পরদিন রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে বক্তৃতায় একথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার বলেছিলেন, কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছেন চিকিৎসকরা, সেই ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অনুমোদনের জন্য আটকে আছে বলে তারা খবর পেয়েছেন।
মন্ত্রী কাদের বলেন, ‘বেগম জিয়া অসুস্থ হলে জেল কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আছে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে কাগজপত্র কেন যাবে?
‘তারা (বিএনপি) মিথ্যার উপর ভর করে রাজনীতি করে, সব জায়গায় মিথ্যাচার করে। এমন একটা ভাব যেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে কাগজ গেছে, তিনি সই করলে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়ে যাবে। তাতে কি বেগম জিয়া সুস্থ হয়ে যাবেন?’
সরকার বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগও উড়িয়ে দেন কাদের; পাশাপাশি বিএনপির চিকিৎসকদের বক্তব্য নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
‘জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকরা যখন চিকিৎসার সার্টিফিকেট দেবেন, সেখানে তো সন্দেহ থাকাটা স্বাভাবিক। এই চিকিৎসক চিকিৎসার প্রকৃত চিত্রটা না বলে রাজনৈতিকভাবে একটা রাজনৈতিক সার্টিফিকেট দিয়ে দিবে, এটা কি গ্রহণযোগ্য?’
‘সত্যিকারের যে চিত্র, এই ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। সরকারের অমানবিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর শেখ হাসিনার সরকার অমানবিক সরকার নয়। তারা আমাদের সাথে যে ব্যবহার করেছেন, তার পাল্টা ব্যবহার কিন্তু আমরা করিনি।’
খালেদার মুক্তির দাবি সরকারকে জানিয়ে কোনো লাভ নেই বলে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
‘খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন আদালতের বদৌলতে। সেটা নিয়েও তারা রাজনীতি করছেন। যেন সরকারই খালেদা জিয়াকে দণ্ড দিয়েছে। আমরা তাকে দণ্ডও দিইনি, আমরা তাকে দণ্ড থেকে মুক্তিও দিতে পারব না।’