টাঙ্গাইল: গোপালপুর উপজেলায় নিহত শামীমকে তাঁর স্ত্রী হত্যা করিয়েছেন। পরকীয়ার কারণেই প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্বামীকে হত্যা করান রাজিয়া। এরপর লাশ বৈরান নদীতে কচুরিপানার নিচে ফেলে রাখা হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজিয়ার প্রেমিক সুজন ও তাঁর বন্ধু আবদুর রহিম শনিবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। গত শুক্রবার সুজন ও রহিমকে সাভারের হেমায়েতপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। রাজিয়াকেও পুলিশ গতকাল শনিবার গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. শামীম টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদরের ভাড়া বাসা থেকে ঢাকার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হন। প্রায় এক সপ্তাহ পর ২৪ আগস্ট গোপালপুর পৌর এলাকার সুন্দর সেতুর কাছে বৈরান নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রাজিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গোপালপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে গোপালপুর থানা-পুলিশ তদন্ত করে। এখন মামলাটি তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানায়, শামীমের স্ত্রী রাজিয়ার সঙ্গে সুজনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে রাজিয়া শামীমকে হত্যার জন্য সুজনের সঙ্গে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চাকরির কথা বলে রাজিয়া তাঁর স্বামী শামীমকে ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট সাভারে সুজন ও রহিমের কাছে পাঠান। সেখান থেকে তাঁরা ২০ আগস্ট রাতে গোপালপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। রাত দেড়টার দিকে গোপালপুর পৌঁছার পর সেখানে তাঁদের আরও একজন সহযোগী অপেক্ষা করছিল। পরে জুয়া খেলার কথা বলে শামীমসহ চারজন বৈরান নদীর পাড়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে যান। সেখানে শামীমকে হাত-পা বেঁধে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বৈরান নদীতে কচুরিপানার নিচে ফেলে রাখা হয়। ঘটনার পর সুজন ও রহিম ভোরবেলায় আবার সাভার চলে যান।
গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হাফিজুর রহমান বলেন, চলতি মাসের ২৭ তারিখ সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গোপালপুরের গোইজারপাড়া গ্রামের সুজন ও তাঁর বন্ধু আবদুর রহিমকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনেই সাভারে গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করতেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার স্বীকার করেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দুজনে টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেন। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নওরিন মাহমুদ ও আরিফুল ইসলাম তাঁদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।