ঢাকা:গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে (এসপি) দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি করেছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।
আজ রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে হয়।
রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে গাজীপুরের এসপি হারুন অর রশিদের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্বিকার। আমি অবিলম্বে গাজীপুরের এসপি হারুনের প্রত্যাহার দাবি করছি।’
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘গাজীপুরের পুলিশ এখন ভয়ংকর আতঙ্কের নাম।’
আগামী ১৫ মে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। ইতিমধ্যে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়েছে। তবে রিজভীর অভিযোগ, ওই নির্বাচন করতে যে পরিবেশ সৃষ্টির দরকার, তা এখনো করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পুলিশও সঠিক আচরণ করছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
দুই সিটিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতন চলছে দাবি করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি ও ২০-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হচ্ছে, এমনকি নেতা-কর্মীদের বিনা কারণে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। দুদিন আগে ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণাকালে গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ এস এম সানাউল্লাহসহ ৪৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও দুই সিটিতে ক্ষমতাসীনদের বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে, দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কালোটাকার ছড়ানোর অভিযোগ করলেও এবং প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ইসিতে জমা দিলেও নির্বাচন কমিশন অন্ধের ভূমিকা পালন করছে।
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, গতকাল গাজীপুরের মৌচাকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে এক নির্বাচনী যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাহাউদ্দিন নাসিম, আহমদ হোসেন এবং গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীরকে বিজয়ী করতে আহ্বান জানান, যা সুস্পষ্টভাবে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে দুই সিটির নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানানো হয়।
রিজভী বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, দলীয়করণের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আওয়ামী লীগ যেভাবে নষ্ট করে ফেলছে, তাতে তাদের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সমাজের বিশিষ্ট নাগরিকেরাও বলেছেন, দলীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন কখনোই সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনের সাত দিন আগে দুই সিটিতে সেনা মোতায়েনের জোর দাবি জানাচ্ছি।’