সিলেটে ছাত্রদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা নারী ও শিশু ফুলজান বিবির বাংলা বাংলার মুখোমুখি রাজনীতি সারাদেশ

hgfdddd
সিলেট সংবাদদাতা
গ্রাম বাংলা নিউজ ২৪.কম

সিলেট: সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৌহিদুল ইসলাম (২৫) নামের ছাত্রদলের এক কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রিকাবিবাজার সংলগ্ন আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নম্বর কক্ষে তৌহিদকে রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ নামধারী ক্যাডাররা।

নিহত তৌহিদ মেডিকেল কলেজের ৪৯তম ব্যাচের এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সামসুর রহমানের ছেলে। মা ও বোনকে নিয়ে সিলেটের তৌহিদ নগরীর কাজলশাহ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে পড়ালেখা করতেন তিনি।

এদিকে, এ ঘটনায় ছাত্রলীগকে দায়ী করে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকারের জন্য ধর্মঘট ডেকেছে কলেজ শাখা ছাত্রদল।

রাত সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসের বাইরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আসলামুল ইসলাম রুদ্র এ ঘোষণা দেন।

তৌহিদের ছোট বোনের উদ্ধৃতি দিয়ে নিহতের সহপাঠী আশিকুর রহমান জানান, সন্ধ্যায় আবু সিনা হলের ছাত্রলীগ কর্মী রাফি মোবাইল ফোনে তৌহিদকে ওই ছাত্রবাসের ১০০৩ নাম্বার কক্ষে ডেকে নিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী আবু সিনা ছাত্রবাসের একাধিক সূত্র জানায়, সেখানে ওই কক্ষে মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন ও ছাত্রলীগের আবু সিনা হল শাখারর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাই, ছাত্রলীগ কর্মী শরিফ, অমিতসহ কয়েকজন রড দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে তৌহিদকে গুরুতর আহত করে।

পরে ছাত্রলীগ কর্মী শরিফুল আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৌহিদকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেলের বারান্দায় রেখে পালিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে উদ্ধার করে জরুরি অস্ত্রোপচার শুরু করেন।

তৌহিদের সহপাঠীদের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময়  তৌহিদের মৃত্যু হলেও পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঘোষণা করেননি।

পরে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ খান জামাল বাংলানিউজকে বলেন, ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগ অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তৌহিদকে খুন করা হয়।

এদিকে, তৌহিদ হত্যার খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী হাসপাতালে লাশ দেখতে যান।

বিভিন্ন বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৪৯তম ব্যাচের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তৌহিদের কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবি করে ছাত্রলীগ। পরীক্ষা দিতে হলে তাকে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে বলেও জানানো হয়।  এরই মধ্যে তৌহিদ এক লাখ টাকা দেয়। বাকি দেড় লাখ টাকা দিতে না পারায় তৌহিদকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়।

ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ, ছাত্রদল সমর্থিত শিক্ষার্থী ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় না করে পরীক্ষা দিতে দেয়না ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

মেডিকেল কলেজের অন্য একটি সূত্রের দাবি, ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের মধ্যে সম্প্রতি মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে।

অপরদিকে, ঘটনার পরপরই আবু সিনা ছাত্রাবাসে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। ঘটনার পর আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সবকটি কক্ষ তালাবদ্ধ করে পালিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার পর থেকে ওসমানী মেডিকেল এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মেডিকেল এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করে  জানান, পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *