খালেদা ভোটার হলেও, তারেক-জোবাইদার এনআইডি নেই

Slider রাজনীতি

19353

দেশের রাজনীতিতে হঠাৎ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তাপ। ইস্যু তারেকের পাসপোর্ট। এদিকে পাসপোর্ট নিয়ে আলোচনার মধ্যে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই লন্ডনে বসবাসরত তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।

ইসির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দশ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান এখনো ভোটার হননি। ভোটার হতে হলে সশরীরে বাংলাদেশে উপস্থিত হতে হবে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হয়, সার্ভারে সরাসরি আলোকচিত্র ধারণ করতে দিতে হয়। ইসি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য , ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা, জোবাইদা রহমান এখনো ভোটার হননি। ইসির তথ্যভান্ডারে সংরক্ষিত সাড়ে ১০ কোটি ভোটারের মধ্যে তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমানের ভোটার হওয়ার তথ্য নেই। সম্ভাব্য ভোটার এলাকা হিসাবে ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল হোসেন রোড এবং বগুড়ার গাবতলী এবং তারেক রহমান, জোবাইদা রহমানের পিতা-মাতার নাম যোগ করে অনুসন্ধান করে তাদের ভোটার হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রও তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমানের ভোটার না হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে। ভোটার তালিকা প্রণয়নের সময় বিএনপি বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন কারা অন্তরীণ ছিলেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিত্সার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান। যদিও বিশেষ কারাগারে অন্তরীণ থাকার পরও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভোটার হয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া ভোটার হওয়ার সময় ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন ক্যান্টনমেন্ট-১ (শহীদ মইনুল হোসেন রোডের বাসভবন)। তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমান প্রবাসী বাংলাদেশি। ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২ এর ১১ ধারা অনুযায়ী প্রবাসী কয়েদি, আইনগত হেফাজতে থাকা ব্যক্তিরা ভোটার হতে পারবেন। সাধারণ রেজিস্ট্রেশন অফিসাররা সংশ্লিষ্টদের ভোটার করতে পারবেন। তবে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের এখনো পর্যন্ত ভোটার করা হয়নি। সাধারণত প্রবাসীরা দেশে সশরীরে হাজির হয়ে ভোটার হতে পারেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় সহসা দেশে আসার সম্ভাবনা নেই।

তবে কমিশন বৃহত্স্বার্থে প্রবাসে অবস্থিত প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। এই প্রক্রিয়ায় তিনি ভোটার হতে পারবেন। যদিও বিষয়টি অনেক কঠিন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান। গত ১০ বছর ধরে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। সেখানে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের আদালতে দুটি মামলায় তার কারাদণ্ডের রায় হয়। আবার তিনি বিএনপি জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানও হন। মা বন্দি হওয়ার পর এখন দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।

যে পাসপোর্ট নিয়ে তারেক যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন, তার মেয়াদ ২০১৩ সালে ফুরিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম দুদিন আগেই বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে তার পাসপোর্ট যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে ‘সারেন্ডার’ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তারেক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে শাহরিয়ার আলম মনে করেন।

তবে বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তারেক রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্য তার পাসপোর্ট যুক্তরাজ্য সরকারকে জমা দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছাড়েননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *