১৯ ক্যাটাগরির কর্মী পাঠানো হবে আমিরাতে

Slider জাতীয়

312669_146

বাংলাদেশ থেকে ১৯ ক্যাটাগরির কর্মী প্রেরণ করা হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দুই দেশের সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আজ দুপুরে প্রবাসীকল্যাণ ভবনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান।

নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, গত ১৮ এপ্রিল সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ব্যক্তি পর্যায়ে ১৯টি ক্যাটাগরির কর্মী নিয়োগের বিষয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানব সম্পদ ও এমিরাটাইজেশন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়নে কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান,‘তদবির সেন্টার’ অর্থাৎ ‘ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের’ মাধ্যমে বাংলাদেশের কর্মীদের নিয়োগ করবে। ‘তদবির সেন্টারটি’ সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের মানব সম্পদ ও এমিরাটাইজেশন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে সরাসরি কাজ করবে। এ ব্যাপারে একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে পরবর্তী কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে কাউকে কোন টাকা ব্যয় করতে হবে না বলে মন্ত্রী জানান।

যে ১৯ টি ক্যাটাগরির নেয়া হবে তাদের মধ্যে রয়েছেন, হাউজমেইড, প্রাইভেট সেইলর, ওয়াচম্যান অ্যান্ড সিকিউরিটি গার্ড, হাউজ হোল্ড শেফার্ড, ফ্যামিলি সোফিউর, পার্কিং ভ্যালেট ওয়ার্কার্স, হাউজহোল্ড হোর্স গ্রুমার, হাউজ ফ্যালকন কেয়ারটেকার অ্যান্ড ট্রেইনার, ডোমেসটিক লেবারার, হাউজ কিপার, প্রাইভেট কোচ, প্রাইভেট টিচার, বেবি সিস্টার, হাউজহোল্ড ফার্মার, গার্ডেনার, প্রাইভেট নার্স, প্রাইভেট পিআরও, প্রাইভেট এগরিকালচার ইঞ্জিনিয়ার ও কুক।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার ও বিএমইটির মহাপরিচালক সেলিম রেজা।
মন্ত্রী বলেন, খুব শিগগিরই সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্য প্রাচ্যের অনেক দেশে কর্মী নিয়োগের সব সব বাধা দূর হয়ে যাবে। শ্রমিকদের নেতিবাচক কর্মকা-ের কারণেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে বড় শ্রম বাজার খুলছে না।

বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমানে এক হাজার শ্রমিক দেশটির কারাগারে আটক রয়েছে এই প্রশ্নের মন্ত্রী বলেন, অপরাধের কারণেই আমরা ওই দেশে শ্রমিক প্রেরণে পিছিয়ে আছি।

সচিব নমিতা হালদার বলেন,‘আমিরাতের মন্ত্রী আমাদের বলেছেন অতীতে যেহেতে অনেক বিশৃঙ্খলা হয়েছে এ কারণে তারা ৫০০রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি বাতিল করেছে। সেই ৫০০ এজেন্সি বন্ধ করে দিয়েছে। একটি মাত্র এক্সিকিউটিভ অর্ডারে তারা বন্ধ করেছে। শুধুমাত্র তাকবির সেন্টারের মাধ্যমে তারা লোক নেবে। ’

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘১৯ টি ক্যাটাগরিতে কিন্তু নারী-পুরুষ উল্লেখ নেই। নির্বিশিষে সবাই যেতে পারবেন। সর্বোচ্চ তিনমাসের মধ্যে আমরা লোক পাঠাতে পারব। মাইগ্রেশন কস্ট, মেডিকেল থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি বিষয় জয়েন্ট কমিটিতে ঠিক করবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের কর্মী কিন্তু সব সময়ই গেছে। কিন্তু নতুন ১৯ ক্যাটাগরিতে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই হয়েছে। আমিরাতে যাওয়ার জন্য কেউ যেন কাউকে টাকা কোন টাকা না দেন সেই জন্য সকালের প্রতি আহবান জানানো।’

তিনি বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান খাতকে ‘থ্রাস্ট সেক্টর’ হিসেবে ঘোষণা করায় এবং এসডিজি বাস্তবায়নে এই খাত বিরাট অবদান রাখবে। ২০১৭ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ধারাবাহিকতায় বিশ্বের ১৬৫টি দেশে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত আছে। এসময় ১৩ হাজার ৫২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে।

বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৭জন বাংলাদেশী কর্মী কর্মরাত আছেন। চলতি বছর ৬০৫ জন কর্মী গেছেন। ২০১৭ সালে গেছেন ৪ হাজার ১৩৫ জন কর্মী।
উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানব সম্পদ এবং এমিরাটাইজেশন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী নাসের আল হামলির উপস্থিতিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার এনডিসি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানব সম্পদ ও এমিরাটাইজেশন মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারী সাইফ আহমেদ আল সুআইদি স্ব স্ব দেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষর করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *