স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর অফিস: গাসিক নির্বাচনে যারা হুমকি ধমকি দিয়ে ভালবাসা আদায় করতে চায়, তাদের কপালে দুর্গতি আছে। নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয় তাদের নিয়ে গবেষনা হবে এটাই স্বাভাবিক। বিয়ের আগে যেমন বর-কনে নিয়ে গবেষনা হয়, ঠিক নির্বাচন আসলে প্রার্থীদের নিয়ে গবেষনা হবে এটাই প্রচলিত রীতি। কারণ ভোটাররা যাকে ভোট দিবেন তাদের সম্পর্কে যথেষ্ট জানার আগ্রহ থাকাটা যৌক্তিক। জেনে শুনে বুঝে ভোট প্রয়োগ করতে হয় এবং ভোটাররা তাই করেন।
ডিজিটাল দুনিয়ায় মাধ্যমের অভাব নেই। সরকারী-বেসরকারী গনমাধ্যমের পাশাপাশি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তাই কোন কিছু গোপন করা কঠিন। কোন সত্য যদি প্রকাশ হতে শুরু করে আর তা যদি জোর করে বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়, তবে সত্য বিস্ফোরণ হয়ে প্রকাশিত হতে থাকে। এতে ধামাচাপা চেষ্টাকারীরই ক্ষতি হয়। সুতরাং জোর করে বা ইচ্ছাকে বাধ্য করে ভালবাসা করা যায় না। ইচ্ছাকে জয় করেই ভালবাসা করতে হয়। আর নির্বাচন হল ভালবাসার শুভপরিণতির ফসল।
কিছু কিছু সত্য আছে, যা সকলেরই জানা। আমরা এমন কিছু জানি,যা সহসাই বলি না। তাই বলে বলবই না, এমনটি নাও হতে পারে। সুতরাং জোর করে, ভয় দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে, সত্য গোপন করার মানষিকতা ভালবাসাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে অপরাধে পরিণত করে। তাই প্রার্থী বা সমর্থকদের উচিত প্রকৃত ভালবাসা করে বিজয়ী হওয়ার চেষ্টা করা কিন্তু জোর করে ভালবাসা করার চেষ্টা না করাই ভাল। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশদলীয় জোট প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার হলফ নামায় যে তথ্য দিয়েছেন তার মধ্যে মিথ্যা তথ্য না থাকলেও গোপন করা হয়েছে কিছু হলেও। এটা সত্য এই কারণে যে, হাসান সরকারের যে পরিমান সম্পদ দৃশ্যমান তার সব কিছু হলফ নামায় নেই। স্ত্রীর গাড়ি বিক্রি করার টাকা নিয়ে হাসান সরকারের নির্বাচন করতে হবে এটাও অবিশ্বাস্য।
আবার আওয়ামীলীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম হলফ নামায় যা যা বলেছেন, বাস্তবে তার বেশী আছে। কারণ জাহাঙ্গীর আলমের দৃশ্যমান খরচের অংক তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই করেছেন এবং এখনো করছেন। ওই দুই প্রতিষ্ঠানে উনার কত খরচ তা তিনি প্রকাশ্যেই বলেছেন। সুতরাং এটাও সত্য যে, জাহাঙ্গীর আলমও হলফ নামায় কিছু তথ্য গোপন করেছেন।
রাজনৈতিক মামলা মোকদ্দমার বিষয় নিয়ে দুই প্রার্থীর বিষয়ে কথা বললে অনেক কিছুই বলা যায়। কারণ রাজনৈতিক জীবনে হাসান সরকার ও জাহাঙ্গীর আলম গ্রেফতার হয়েছেন। দুই জনই রিমান্ডে গিয়েছেন। দুটি গ্রেফতারই বিরোধী দলে থাকা অবস্থায়। তবে তাদের দুই জনের মামলার প্রকৃতি ভিন্ন। দুই জনের মামলা গুলো সবই রাজনৈতিক এটাও বলা যাবে না, তবে রাজনৈতিক মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এটাই রাজনীতি।
গাজীপুরের গণমাধ্যমকর্মীরা যথেষ্ট আন্তরিক। তারা রাজনৈতিক নেতাদের যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা করেন। না হয়, চলমান গাসিক নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী নিয়ে লেখার উপকরণ যথেষ্ট বিদ্ধমান। সকল উপকরণ নিয়ে যদি তারা লিখেন, তবে দুই জনেরই ইমেজ সংকট দেখা দিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তাই, এই দিক থেকে বলা যায়, গাজীপুরের গণমাধ্যম কর্মীরা রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। আর তারা আন্তরিক বলেই প্রার্থীদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করেন ও তাদের খোঁজ খবরও রাখেন। ডাক দিলেই দৌঁড়ে যান সাংবাদিকেরা।
সুতরাং আসন্ন ১৫মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গাসিক নির্বাচন। এই নির্বাচনে গণমাধ্যম কর্মীরা প্রার্থীদের প্রতি ভালবাসায় সিক্ত। তাই জোর করে ভালবাসা আদায় করার দরকার নেই। জোর করলে ভালবাসা অপরাধ হয়ে যাবে এটা মনে রাখা উচিত।