সম্পাদকীয়: ঢাবির ভিসি একজন দায়িত্বহীন অভিভাবককেও পরাজিত করলেন না তো!

Slider বাধ ভাঙ্গা মত সম্পাদকীয়

download

কোন দায়িত্বহীন অভিভাবকও রাতের অন্ধকারে তার বিবাহযোগ্য সন্তান এমনকি যে কোন বয়সের সন্তানকেও ঘর থেকে বের করে দেন না। যদি দিতেও হয় বলে তিনি মনে করেন তাও দিনের বেলায় অপরাধটি করতে পারেন তবুও রাতে নয়। কিন্তু ঢাবির ভিসি রাতের অন্ধকারে ৮জন মেয়েকে বের করে দিয়ে কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তা জানা নেই। তবে কোন অনৈতিক ও দায়িত্বজ্ঞানীন অভিভাবককে পরাজিত করলেন কি না তা জাতিই ভাল জানে।

জানা গেছে, আটজন ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সম্মানের সঙ্গে ওই ছাত্রীদের হলে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সমাবেশও হয়েছে। নয়তো ছাত্রসমাজ আবার রাজপথে নামবে বলে হুসিয়ারী দেয়া হয়েছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তাদের রাতের অন্ধকারে বের করে দেয়া হয়েছে বলে বলেছেন ঢাবির ভিসিও।

প্রতিবাদকারীর বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাধ্যক্ষের একটি অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তিনি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দুই হাজার ছাত্রীকে বহিষ্কারের কথা বলেন। এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার মাধ্যমে হল প্রশাসনের নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কলঙ্কিত ইতিহাস রচিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান রক্ষার্থে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, ছাত্রসমাজের স্থান ক্লাসে, তাঁদের রাজপথে নামতে বাধ্য করবেন না।

ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে হলের প্রাধ্যক্ষ ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবিতা রেজওয়ানা বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে ডেকেছি। তাঁদের মোবাইল চেক করা হয়েছে। তাঁরা ফেসবুকে ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব ছড়াচ্ছে। মুচলেকা দিয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের সঙ্গে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে ঢাবির ভিসি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক একাউন্ট খুলে ওই সব ছাত্রীরা গুজব ছড়ানোর কারণে তাদের নিকটবর্তি অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই কাজটি করা হয়েছে বৃহগসপতিবার রাতে। এই কথাটি বলার কারণে ঢাবির ভিসি তার নীতি ও নৈতিকতার জায়গা থেকে সরে গেছেন। কারণ ওই ছাত্রীরা গুজব ছড়িয়ে থাকলে তাদের পুলিশে দেয়া উচিত ছিল। কিন্ত তা না করে রাতের অন্ধকারে তাদের হল থেকে বের করে দেয়া কতটুকু অমানবিক হয়েছে তা ভিসিও ভেবে দেখেন নি বলেই মনে হচ্ছে। কারণ তিনি যদি এটা ভেবে দেখতেন তবে দিনের বেলায় হলেও তাদের অভিাভকদের নিকট দিতে পারতেন। এ ক্ষেত্রে ভিসি সাহেব যে কাজটি করেছেন তাতে তিনি একজন সাধারণ অভিভাবককেও হার মানিয়ে জয়ী হয়েছেন। এটা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় বিষয়।

জাতি আশা করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত এত বড় প্রতিষ্ঠানের ভিসি নিয়োগ করার আগে যথেষ্ট ভেবে চিন্তে করা দরকার। না হলে এমন ইতিহাস তৈরী হবে যা পিছনের সকল ইতিহাসকে পরাজিত করে ফেলেবে।

আমরা চাই, এ ধরণের ঘটনা আর না হউক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *