ঢাকা: কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেননি তার স্বজনেরা। বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাত করতে দেয়নি বলে জানিয়েছে বিএনপি।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা আমাদের চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারাকর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কারাগারে গেলেও চেয়ারপারসনের পরিবারের সদস্যদের তারা বলেছেন, ম্যাডাম উপর থেকে নিচে নামতে পারছেন না। ফলে তার শারীরিক অবস্থা প্রচ- খারাপ হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদেরও দেখা করতে দেয়া হয়নি।
কারা কর্তৃপক্ষের কাছে ম্যাডামের এই অবস্থার কথা শুনে পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা খুবই উদ্বিগ্ন বলে আমাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। এর আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য তার বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের ছেলে অভি, বড় ছেলে তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু ও তার মেয়ে শাহিনা খান জামান বিন্দু আজ শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে তার চারজন স্বজন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। প্রতি শুক্রবার পরিবার ও স্বজনদের সাক্ষাতের নির্ধারিত সময়সূচি থাকলেও এবার তার ব্যত্যয় ঘটে। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে গেলেও তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে কারাকর্তৃপক্ষের তরফে কোন বক্তব্য আসেনি।
উল্লেখ্য, গত ৮ই ফেব্রুয়ারি কারাগারে নেয়ার পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আদালতে নেয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তাকে আদালতে নেয়া হয়নি। পরে ২৯শে মার্চ খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা আলমগীরের নির্ধারিত সাক্ষাতটিও বাতিল করা হয় অসুস্থতার কারণে দেখিয়ে। এ ঘটনার পর কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতি জানার চেষ্টা ও সুচিকিৎসার দাবিতে সোচ্চার হয় বিএনপি। পরে সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ৭ই এপ্রিল বিএসএমএমইউতে এনে এক্স-রে করা হয় তার। চার সদস্যের এই বোর্ডের সদস্যরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ‘গুরুতর নয়’ মন্তব্য করলেও জানান, তার ঘাড়ে ও কোমরে সমস্যা রয়েছে। তারা কারাগারে খালেদা জিয়ার জন্য অর্থপেডিক বেডের পরামর্শও দেন। বিএনপির তরফে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সাক্ষাতের সুযোগ ও তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির দাবি আসে। বিএনপির আবেদন-নিবেদনের পরও ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সাক্ষাত এবং তাদের পরামর্শ নেয়ার সুযোগ মেলেনি খালেদা জিয়ার। কিন্তু কয়েকদিন আগে তার দুইজন ব্যক্তিগত চিকিৎসককে অনানুষ্ঠানিকভাবে ডেকে পান কারাকর্তৃপক্ষ। তবে একইদিন দলের মহাসচিব সহ তিন সিনিয়র নেতার নির্ধারিত সাক্ষাতটি বাতিল করে দেয়। গতকালও কারা কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের স্বজনদের সাক্ষাতের সুযোগ দেয়নি।