আজ সকালে আকাশ ভরা রোদ। সে রোদে নতুন দিনের ঘ্রাণ, নতুন বছরের গান। আজ পয়লা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। বাঙালির দিনপঞ্জিকায় ১৪২৫ সনের গণনা শুরু হয়েছে। দেশবাসী পুরোনো দিনের ব্যর্থতা, গ্লানি ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছে বর্ষবরণের বৈশাখী উৎসবে।
খাজা, গজা, বাতাসা, তালপাতার হাতপাখা, নলখাগড়ার বাঁশি, টমটম গাড়ি আবহমানকালের বাঙালি লোক ঐতিহ্যের নানা উপকরণের পসরা সাজিয়ে বসেছে বৈশাখী মেলা। খাবারের তালিকাতে প্রাধান্য পাচ্ছে ভর্তা-ভাজি, নতুন আম দিয়ে রান্না করা ডালের মতো বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পদ। সকালে অনেকেই খাচ্ছেন পান্তা-ইলিশ।
প্রকৃতির নিয়মেই সকাল থেকেই খরা রোদ। আছে যানজটও। সেসব উপেক্ষা করে রাজধানীতে বিপুল প্রাণের এই উৎসবে শামিল হতে আজ ভোর থেকেই সুসজ্জিত হয়ে পথে নেমেছে অগণিত মানুষের ঢল।
প্রভাতে উদিত সূর্যের আলোর সঙ্গে রমনার বটমূলে সুর ছড়িয়ে দিচ্ছেন ছায়ানটের শিল্পীরা। চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হবে নববর্ষের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য লালন সাঁইয়ের গান ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। চারুকলা অনুষদের এই দৃষ্টিনন্দন মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমাদের বৈশাখী উৎসব হয়েছে আরও গৌরবান্বিত।
ছায়ানট ১৯৬৭ সালে প্রথম রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখে প্রভাতি সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। পয়লা বৈশাখের উৎসবের এই বিপুল বিস্তৃতির নেপথ্যে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ছায়ানটের এ আয়োজন। ছায়ানটের নববর্ষের অনুষ্ঠানে আছে একক ও সম্মেলক গান ও আবৃত্তি।