সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ সুপার মো. মেহেদুল করিম
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের সাজাই বাজারে ১০ টাকার চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে শার্টারগানের গুলিতে বিপ্লব হোসেন (২৪) ও মন্ডল মিয়া (২৮) নামে দুই যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তোতা মিয়াকে শার্টারগান ও এক রাউন্ড কার্তুজসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মেহেদুল করিম।
পুলিশ সুপার বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) কোদালকাটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান এবং ডিলারের মধ্যে চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় তোতা মিয়া নামে এক চাল ডিলার শার্টারগান দিয়ে গুলি চালায়। এতে বিপ্লব হোসেন ও মন্ডল মিয়া নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে ওইদিন রাতেই পুলিশ শার্টারগান, কার্তুজসহ তোতা মিয়াকে গ্রেফতার করে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১১ এপ্রিল) কোদালকাটি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ চলছিলো। এসময় চাল ডিলার তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ওই ওয়ার্ডের কয়েকজন গ্রাহককে চাল না দিয়ে তাদের কাছ থেকে টিপসই ও কার্ড নেওয়ার অভিযোগ তুলে।
চাল বঞ্চিত ভুক্তভোগী তালেব ও রোকন নামের দুই গ্রাহক এই অভিযোগটি স্থানীয় ইউপি মেম্বার কামাল উদ্দিনকে জানান। ইউপি মেম্বার বিষয়টি অভিযুক্ত তোতা মিয়ার কাছে জানতে চাইলে ইউপি মেম্বারের সঙ্গে তোতা মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়।
এ বিষয়টি কোদাল কাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু জানতে পেরে তোতা মিয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি চেয়ারম্যানকে অপমান করেন। এ খবরটি জানতে পেরে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কুর আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কোদালকাটি বাজারে বিক্ষোভ করেন। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান ছক্কু দুপুরের দিকে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তোতা মিয়ার লোকজন চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করে।
এ ঘটনাটি পরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে তোতা মিয়া ও তার ভাই দুলু মিয়া তাদের ব্যবহৃত শার্টারগান দিয়ে চেয়ারম্যান ছক্কু গ্রুপের লোকজনের ওপর গুলি চালালে এতে চেয়ারম্যান ছক্কুর নাতি বিপ্লব হোসেন ও ভাতিজা মন্ডল মিয়া গুরুতর আহত হয়।
গুলিবিদ্ধ দুই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে রাজিবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. দেলোয়ার হোসেন তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করে।