ঢাকা: সরকারের আশ্বাসে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আজ মঙ্গলবার আন্দোলনকারীদের একটি পক্ষ মিছিল করেছে। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের একটি মিছিল রোকেয়া হলের সামনে দিয়ে টিএসসি হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে জড়ো হয়। রাজু ভাস্কর্যের সামনে শত শত আন্দোলনকারী কোটা সংস্কারের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন এই পক্ষটিকে মিছিল না করার অনুরোধ জানান। সরকার শেষ পর্যন্ত কী করে তা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে মিছিল শুরু করে আন্দোলনকারীদের একটি পক্ষ।
বিদ্যমান কোটার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে, সরকারে এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলন আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। গতকাল সোমবার বিকেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সরকারের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের পর বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা সরকারের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করছেন। তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হওয়া সবাইকে মুক্তি দেওয়া বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তবে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। গতকাল রাতে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল ও বাংলা একাডেমি এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারা স্লোগান দিতে থাকে।
ওই অংশটিই আজ সকাল থেকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আতাউল্লাহ আজ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। আমরা আন্দোলনকারীদের বোঝাচ্ছি, অন্তত ৭ মে পর্যন্ত তারা যেন আন্দোলন স্থগিত রাখেন। আমরা দেখতে চাই সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়। ৭ মের মধ্যে সরকার কোটা সংস্কারের পক্ষে দাবি মেনে না নিলে আমরা আবারও আন্দোলন শুরু করব।’ তিনি আরও বলেন, যাঁরা এখন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা এ বিষয়ে না জেনেই আন্দোলন করছেন। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করছেন।
মো. আতাউল্লাহ জানান, কোটা সংস্কারের পক্ষে ফেসবুকে একটি গ্রুপ আছে, যার সদস্য ১৪ লাখের ওপরে।
এদিকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে কয়েকজন জানান, আন্দোলন স্থগিত রাখলে সরকার দাবি পূরণ করবে না।
বিদ্যমান কোটার সংস্কার চেয়ে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এ দফায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছে। গত রোববার তাদের পদযাত্রা ও অবস্থান কর্মসূচি চলার সময় ঢাকায় পুলিশ বাধা দিলে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।