ধর্ষককে ফাঁসাতে মেয়েকে খুন করতে রাজি হন বাবা

Slider বিচিত্র

16855

গভীর রাতে শরীরে ছুরি চালিয়ে নিজের মেয়েকে যখন খুন করে ভাড়াটে খুনীরা তখন অদূরে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য অবলোকন করেন জন্মদাতা পিতা সায়েদ আলী। রাস্তার পাশে খুনের পর মেয়েটির লাশ ফেলে রাখা হয় হাওরে।

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে স্কুলছাত্রী বিউটি আক্তার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে ঘাতকদের জবানবন্দীর এসব বর্ণনা তুলে ধরেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। আজ বিকেল ৬টায় পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে তিনি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন।

পুলিশ সুপার জানান, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামের সায়েদ আলীর মেয়ে বিউটি আক্তারকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাবুল মিয়াসহ তার লোকজন। তাকে অপহরণ করে প্রায় ১ মাস বিভিন্ন স্থানে আটকে রেখে ধর্ষণ করে বাবুল। এ ঘটনায় বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিউটির বাবা সায়েদ আলী। মামলায় সাক্ষী করা হয় বিউটির চাচা ময়না মিয়াকে।

অপরদিকে, গত ইউপি নির্বাচনে বাবুল মিয়ার মা কলম চান সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে প্রার্থী হয়ে ময়না মিয়ার স্ত্রী আছমা আক্তারকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন। এ নিয়ে বাবুল মিয়া ও ময়না মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলছিল। এদিকে, বিউটি আক্তার ধর্ষণের শিকার হওয়ায় বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিশোধের সুযোগ নেয় ময়না মিয়া।

ময়না মিয়া বিউটির বাবা সায়েদ আলীকে বুঝায়, তোমার মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে কলঙ্কিনী হয়ে গেছে। এই মেয়ে রেখে লাভ কি। তোমার মেয়েকে খুন করে ধর্ষক বাবুলের উপর চালিয়ে দিলে তার উপযুক্ত শাস্তি হবে। ময়না মিয়ার কথায় সায় দেয় সায়েদ আলী। কথামতো ১৬ মার্চ রাত ১২টার দিকে সায়েদ আলী লাখাই উপজেলার গুনিপুর গ্রামে গিয়ে বিউটি আক্তারকে তার নানা বাড়ি থেকে এনে তুলে দেয় ময়না মিয়ার হাতে। রাত ৩টার দিকে ময়না মিয়া ও এক ভাড়াটে খুনী মিলে বিউটি আক্তারকে খুন করে। খুনের সময় কিছু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন পিতা সায়েদ আলী।

এ ঘটনায় ঘাতক ময়না মিয়া ও সায়েদ আলী উভয়েই হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী প্রদান করেন। শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জবানবন্দী দেন সায়েদ আলী। শুক্রবার রাতে জবানবন্দী দেন ময়না মিয়া।

প্রসঙ্গত, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বিউটি আক্তার প্রথমে অপহরণ হয়। পরে ফিরে এলে তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নানাবাড়িতে। সেখান থেকে ১৬ মার্চ সে নিখোজ হয়। ১৭ মার্চ হাওরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। তার লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *