দারোগার থাপ্পড়ে অসুস্থ কিশোর হাসপাতালে

Slider সারাদেশ

112333_daroga

পাকুন্দিয়ায় মুখলেছুর রহমান নামে থানার এক এএসআই এর বিরুদ্ধে বধির কিশোরকে থাপ্পড় দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলার অভিযোগ ওঠেছে। নির্যাতনের শিকার কিশোরটির নাম মোফাজ্জল মিয়া (১৩)। সে উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়নের মান্দারকান্দি গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এই বর্বরোচিত ঘটনার পর অজ্ঞান অবস্থায় ছেলেটিকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনেরা।
গতকাল রাতে তার মা দেলোয়ারা বেগম জানান, সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে এসে পাকুন্দিয়া থানার এএসআই মুখলেছুর রহমান তার স্বামী মিলন মিয়ার খোঁজ করেন। এ সময় তার বধির ছেলে মোফাজ্জলকে দারোগা মুখলেছ তার বাবা কোথায় জিজ্ঞেস করেন।
মোফাজ্জল কানে কিছু শুনতে পায় না। তাই দারোগার প্রশ্নে সে কিছু বুঝতে না পেরে নিরুত্তর দাঁড়িয়ে থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এএসআই মুখলেছুর রহমান তার ছেলে মোফাজ্জলের কানচাপায় প্রচ- জোরে থাপ্পড় মারেন। দারোগার থাপ্পড়ে ঘটনাস্থলেই মোফাজ্জল লুটিয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে দারোগা তড়িঘড়ি করে তাদের বাড়ি থেকে চলে যান। পরে এলাকাবাসী মোফাজ্জলকে কটিয়াদী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দারোগার পক্ষ হয়ে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিকেলে সালিশের উদ্যোগ নিয়ে চাপের মুখে মোফাজ্জলকে চিকিৎসা না করিয়েই পরিবারের মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করে। মোফাজ্জলের বাবা মিলন মিয়া মুঠোফোনে প্রতিবেদককে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তপন কুমার দত্ত জানান, মোফাজ্জলকে গতকাল রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কানে আঘাত জনিত সমস্যা নিয়ে সে হাসপাতালে ভর্তি হয়। কিন্তু আজ দুপুরের দিকে তার মা ও ভাই হাসপাতাল থেকে তাকে রিলিজ করিয়ে নিয়ে চলে যান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোফাজ্জলের বাবা মিলন মিয়ার এলাকায় চা এর দোকান রয়েছে। মিলন মিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী ফালু মিয়ার জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি ফালু মিয়া এ ব্যাপারে আদালতে অভিযোগ করলে আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে পাকুন্দিয়া থানার ওসিকে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার নির্দেশ দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতের ১৪৪ ধারা জারির আদেশ নিয়ে পাকুন্দিয়া থানার এএসআই মুখলেছুর রহমান মান্দারকান্দি গ্রামের মিলন মিয়ার বাড়িতে যান।
এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া থানার ওসি আজহারুল ইসলাম এএসআই মুখলেছুর রহমানের বরাত দিয়ে বলেন, এএসআই মুখলেছ আমাকে বলেছেন, তিনি কিশোরটিকে থাপ্পড় মারেননি, ধমক দিয়েছিলেন। কিশোরকে মারার ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মারা হলে কিশোরের পরিবার নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে অভিযোগ দিতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *