জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট নামের একটি এতিম খানায় বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। মামলাটির রায় ঘোষণা হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ। রায় ঘোষণার আগ থেকেই রায়ে কী হতে পারে, খালেদা জিয়াকে কতোদিন কারাগারে কাটাতে হতে পারে, কয়েদিন পর জামিন পাবেন, কয় রাত জেলে কাটাবেন এমন অনেক প্রশ্ন ঘুরতে থাকে মিডিয়াসহ ইন্টারনেট দুনিয়ায়।
এ মামলায় ৫৬ দিন হতে চললো বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাগারে বন্দি রয়েছেন। কারাগারে তার কয়েদি নম্বর হচ্ছে ০০১। অন্যদিকে ভিন্ন জগত এবং ভিন্ন দেশে হলেও খালেদা জিয়ার মতোই জনপ্রিয় এক ব্যক্তির ৫ বছরের জেল হলো বৃহস্পতিবার। ব্যক্তিটিকে সকলেই চিনবেন। তিনি হলেন-বলিউডের সুপারস্টার সালমান খান। একটু লক্ষ্য করলে হিরো সালমান খান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার এই কারাগারে যাওয়ার বিষয়টিতে বেশ কিছু মিল আছে দেখবেন।
দীর্ঘ ২০ বছর পরে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার মামলার রায়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের। বৃহস্পতিবার যোধপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেব কুমার খতরি এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার রূপি জরিমানাও করা হয়। একই মামলার অভিযোগ থেকে অভিনেতা সাইফ আলী খান, নীলম এবং অভিনেত্রী টাবু ও সোনালী বেন্দ্রেকে অব্যাহতি দেয় আদালত। তবে খালেদা জিয়ার মামলার ক্ষেত্রে অবশ্য বাকিদের অব্যাহতি দেয়া হয়নি। উল্টো ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এদিকে রায় ঘোষণার পর বৃহস্পতিবারের রাতটা জেলেই কাটাতে হয়েছে বলিউডের প্রভাবশালী অভিনেতা সালমান খানকে। অনেকেই ভেবেছিলেন- সালমান খানের মতো একজন সুপারস্টারকে হয়তো একদিন পরেই জামিনে মুক্তি দেয়া হতে পারে। কিন্তু না, তার জামিন আবেদনের রায় এখনো দেয়া হয়নি। শনিবারও শুনানি চলবে বলে জানিয়েছে আদালত। এর মানে হচ্ছে শনিবার পর্যন্ততো অবশ্যই তাকে জেলেই কাটাতে হবে। আর যদি মিলে যায় তবে ৫৬ দিনও কাটাতে হতে পারে!
এদিকে জেলখানায় সালমান খানের কয়েদি নম্বর পড়েছে ১০৬। চার দেয়ালের মাঝে বর্তমানে এটাই বলিউড ভাইজানের পরিচয়। কারাগারের ২ নম্বর ওয়ার্ডে সালমান ও ধর্ষকবাবা আসারাম বাপুকে পাশাপাশি সেলে রাখা হয়েছে। তবে খালেদা জিয়াকে কিন্তু রাখা হয়েছে একা। সঙ্গে অবশ্য ফাতেমা রয়েছেন।
কারা কর্মকর্তা বিক্রম সিং জানান, কারাগারে সালমানকে সাধারণ কয়েদি হিসেবে রাখা হয়েছে। তাকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। প্রথম অবস্থায় খালেদাও তাই ছিলেন। তবে নিয়মানুযায়ী, সালমানের সেলে সাধারণ কাঠের বিছানা, কম্বল ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবস্থা রয়েছে। এখন খালেদার সেলেও এগুলো আছে।
বৃহস্পতিবার রাতে কারাগারে এসে একজন দেহরক্ষী সালমানকে তার পোশাক দিয়ে গেছেন। শুক্রবার থেকে তাকে কয়েদির পোশাক পরতে হবে। বেগম জিয়াকেও পরতে হয়েছে। তবে ডিভিশন পাওয়ার পর থেকে সাধারণ পোশাকে আছেন তিনি। সালমানের ক্ষেত্রে হয়তো ডিভিশন পেলে আবারো পরতে পারবেন নজরকাড়া জিন্ট-টিশার্ট (যদি ভারতের কারা আইনে থাকে)।
জানা গেছে কারাগারে যাওয়ার পর একরাত নাকি কিছুই খান নি এই অভিনেতা। খালেদা জিয়া অবশ্য খাবার খাচ্ছেন কিন্তু খাচ্ছেন না ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তারদের দেয়া ওষুধ।
সবকিছু মিলিয়ে বিষয় দুটি একদিক থেকে প্রায় একই রকম। আর এই মিলগুলো কারাগারে বেগম খালেদা জিয়া কোনোভাবে জানতে পারলে নিশ্চই মনে মনে হলেও সমবেদনা জানাবেন সালমানের জন্য! কে জানে-সালমানও হয়তো খালেদার জেল জীবনের কথা শুনে ব্যথিত হয়েছিলেন!