স্ত্রীর দেয়া তথ্যে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ রংপুরের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র্যাব ও পুলিশ।
র্যাব ১৩-এর কর্মকর্তা মেজর আরমিন রাব্বী বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ভৌমিকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তিনি লাশের বিষয়ে তথ্য দেন।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রংপুরের নির্মাণাধীন একটি বাড়িতে বালু চাপা অবস্থায় একটি লাশ পাওয়া গেছে। লাশটি শনাক্তের জন্য রথীশ চন্দ্রের ভাই ও স্বজনদের খবর দেয়া হয়েছে।
রংপুর পুলিশের কর্মকর্তা মুকতারুল আলম ঘটনাস্থল থেকে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, রংপুর শহরে তাজহাট মোল্লা পাড়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এরপর তার স্ত্রী এবং ছোট ভাই মৃতদেহ ভৌমিকের বলে শনাক্ত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ভৌমিকের স্ত্রী দীপা ভৌমিক এবং তার একজন সহকর্মীকে আটকের পর তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ভৌমিকের বাড়ির কাছেই তাজহাট মোল্লা পাড়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ির টয়লেটের স্লাবের পেছনে খোঁড়া গর্তের ভেতর থেকে রাতে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এই বাড়িটি ওই সহকর্মীর একজন আত্মীয়ের বাড়ি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যে পুলিশের সন্দেহ, ভৌমিককে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, ভৌমিকের স্ত্রী এবং তার সহকর্মীর মধ্যে থাকা সম্পর্কের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে তাদের প্রাথমিক ধারণা।
ভৌমিক নিখোঁজ হবার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট নয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে সোমবার দীপা ভৌমিকের একজন সহকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর মঙ্গলবার র্যাব গ্রেফতার করে দীপা ভৌমিককে। এরপর তার দেয়া তথ্যেই মিলেছেভৌমিকের লাশের সন্ধান।
রংপুরের জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার সরকারি কৌঁসুলি রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে শুক্রবার ভোর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তার পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করে।
তখন তার স্ত্রী দীপা ভৌমিক জানিয়েছিলেন, শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে রথীশ চন্দ্র বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসবেন জানালেও পরে তার কোন খোঁজ মেলেনি। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রথীশ চন্দ্র ছিলেন রংপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের রংপুর বিভাগের ট্রাস্টি, পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক।
এছাড়া তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেরও প্রথম সারির নেতা।